সাদিদ মালেক ।।
একটি ইসলামি সমাজ আর একটি পশ্চিমা সমাজের মধ্যে পার্থক্য কী! ইসলামি সমাজে প্রত্যেকটি মানুষের সামাজিক মূল্যবোধ নির্ধারিত থাকে। মা-বাবা থেকে শুরু করে শিশু, নারী, অসহায়, বৃদ্ধা, পঙ্গু সবার দায় কারো না কারো উপর দেয়া থাকবে। এটা ইসলামি সামাজিক ব্যবস্থার অংশ। সামাজিক সুদৃঢ় বন্ধনের পরিষ্কার দিকনির্দেশনার মাধ্যমে ইসলাম সামাজিক মূল্যবোধ ও ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করে।
পক্ষান্তরে পশ্চিমা সমাজ এসকল ক্ষেত্রে সমাজ-বিচ্ছিন্ন করে সবাইকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। সামাজিক মর্যাদা ও অধিকার থেকে সবাইকে বঞ্চিত করেছে। নিজেদের পুঁজিবাদ, অর্থ ও নারিলিপ্সা পূরণ করতে যা জরুরি ছিল।
ফলে এর কিছু আফটার শক তাদের সইতে হয়েছে। সেটাকে সামাল দিতেই তাদের এমন নতুন কিছু সলুশন আবিষ্কার করতে হয়েছে, যেগুলো স্বতন্ত্রভাবে পুঁজিবাদের কাজে আসবে। মোটামুটি মানবিক ব্যাপারগুলোকেও তারা পুঁজিবাদ ও মধ্যস্বত্বভোগের উপলক্ষ বানিয়েছে। সে কারণেই তাদের বৃদ্ধাশ্রম, বিপুল হারে মাতৃসদন, যৌনশিক্ষা (পড়ুন, নিরাপদ ব্যাভিচার) ব্যবস্থাপনা, এইডস নিরাময় কেন্দ্র, ব্যাংক ও বীমাসহ আরো বিশাল ফিরিস্তি।
এ বিষয়গুলো বিচ্ছিন্ন কোনো কিছু নয়। এক সিস্টেমেটিক ব্যবস্থার অংশ। মুসলিম সংখ্যাগুরু দেশগুলোর যে দেশ যতটা পশ্চিমের প্রভাবমুক্ত, সে দেশ ততটা এসব জটিলতামুক্ত, লক্ষ্য করবেন।
সম্প্রতি মিল্ক ব্যাংক ব্যাপারটাও বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। একট দেশে যিনা, ব্যাভিচার, ফ্রি মিক্সিং যখন ছড়ানো হবে, নারীদের ঘর থেকে বের করে রাস্তায় নামানো হবে, তখন তার অত্যাবশকীয় অনুষঙ্গ হিসেবে দায়হীন বাচ্চাগুলার জন্য মিল্ক ব্যাংক লাগবে।
মিল্ক ব্যাংকের ইতিহাস দেখুন, ইউরোপ আমেরিকা থেকে এটার শুরু। কারণ এটার প্রয়োজনীয়তা তারাই তৈরি করেছে। মুসলিম দেশগুলোতে এটার দরকার হবে না। হওয়া উচিতও নয়।
তবু দুঃখজনক হলো, ‘লিকুল্লি সাকিতানিন লাকিতাহ’ প্রত্যেক পতিত জিনিস তুলে নেয়ার লোক আছে। ইসলামের সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস করতে পশ্চিমারা যাই প্রস্তাব করে, সেটাকেই হালাল করার জন্য একদল বসেই থাকে!
পরিষ্কার জানুন, মিল্কব্যাংক চার মাজহাবের ঐক্যমত্যে হারাম। কাজেই কারো বিচ্ছিন্নতা ও দলিলবিহীন আলাপে পটে যাওয়ার কোনো অর্থই হয় না। মনে রাখতে হবে, সকল মানবিক সমস্যার সমাধানের জন্য ইসলামের চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা কোথাও নেই। এটা শুধু বিশ্বাস নয়, বাস্তবতা। এটাই সাইন্স!
(লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া )
আরএম/