কাওসার আইয়ুব
অতিথি লেখক
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের অনেক গুরুতর বিষয়ের সমাধান খুঁজে পাচ্ছে। বহুবিধ রোগের মোকাবেলায় আল্লাহ তায়ালা উপযুক্ত চিকিৎসাও মানুষের হাত ধরে দিন দিন আবিস্কার করছে। এবং পুরাতন চিকিৎসা নীতিমালাকে আধুনিকায়ন করছে। রোগ নিরুপর মানুষের জন্য আরো সহজ করে তুলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান। মানবাঙ্গের বিকল্প হিসেবে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের চেষ্টাও কম নয়। অনেক অঙ্গের বিকল্পই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান তৈরি করে দিয়েছে। দাঁতের ক্যাপ (লাগানো দাঁত বা কৃত্রিম দাঁত) তার মধ্যে একটি।
দাঁত খোদা প্রদত্ত্ব অন্যতম নেয়ামত। তেমনই তা নষ্ট হলে বা পড়ে গেলে বিপজ্জনক। দাঁত নষ্ট হয়ে গেলে কৃত্রিম দাঁত লাগানোর ব্যবস্থা রয়েছে, স্বর্ণ-রূপা দ্বারা বাঁধানো হয় সে দাঁত। কখনো তা ফিক্সট করে বাঁধানো হয়, যা স্বাভাবিক ভাবে খোলা যায় না। অপারেশন বা কষ্ট করে খুলতে হয়। আবার কখনো ফোল্ড করে বাঁধানো হয়, যা ইচ্ছা করলে খোলা যায়, লাগালো যায়।
কৃত্রিম দাঁত লাগানোর ক্ষেত্রে ইসলাম কোন বিধিনিষেধ আরোপ করে না। কৃত্রিম দাঁত ব্যবহারের ক্ষেত্রে কুরআন সুন্নাহর হুকুম সম্পর্কে মুসলিমদের ভালোভাবে জানতে হবে। এ সংক্রান্ত মাসয়াগুলো জেনে সেই অনুযায়ী আমল করতে হবে।
তিরমিজি শরীফের এক রেওয়ায়েত রাসূল সা. বলেছেন, আরফাজা ইবনে আসআদ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, জাহেলী যুগে কিলাবের যুদ্ধের দিন আমার নাক আক্রান্ত হয়েছিল। ফলে আমি রূপা দ্বারা বানানো নাক লাগাই। কিছুদিন পর তা দূর্গন্ধ ছড়াতে লাগলো। তখন রাসূল রা. আমাকে স্বর্ণের নাক ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন।–তিরমীজি শরীফ।
এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ফুকাহায়ে কেরাম স্বর্ণের তৈরি দাঁত ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এ বিধান পুরুষ মহিলা সবার জন্যই। বর্তমানে যেসব পাথরের দাত ব্যবহার করা হয় শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনটিই নাজায়েজ নয়।
দাঁতের সাথে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসআলা হচ্ছে- অজু গোসলে কৃত্রিম দাঁত খুলে চামড়ায় পানি পৌঁছাতে হবে কিনা? এ ব্যাপারে ফেকাহবিদরা বলেন, কৃত্রিম দাঁত যদি ফিক্সট হয়, যা স্বাভাবিক ভাবে খোলা যায় না, তা মূল দাঁতের হুকুমে।অর্থাৎ, ফরজ, সুন্নত বা মুস্তাহাব কোন প্রকারের অজু বা গোসলে সেই কৃত্রিম শুধুমাত্র পানি দিয়ে ধৌত করলেই হবে।
আর যদি লাগানো দাঁত ফোল্ড হয়, ইচ্ছে করলেই যা খোলা যায়, তবে তা ফরজ গোসলে খোলা জরুরি এবং অজুর সময় খোলা মুস্তাহাব।- তথ্যসূত্র: ফাতওয়ায়ে শামী-খন্ড ১ম পৃষ্ঠা ১৫৪, আহসানুল ফাতওয়া খন্ড ২য় পৃষ্ঠা ৩২।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইফতা বিভাগ, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ি বড় মাদরাসা, ঢাকা।
আরএম/