আবদুল্লাহ তামিম ।।
কিয়ামতের দিন ছোট কোনো আমলও অনেক মূল্যবান হয়ে যাবে। তাই ছোট ছোট নেক কাজকে অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ ইখলাসের সঙ্গে ছোট ছোট কাজই আমাদের এনে দিতে পারে বড় প্রাপ্তি।
কুরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। কারণ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখানো হবে। সুতরাং কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করে থাকলে সে তা দেখতে পাবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করে থাকলে তাও দেখতে পাবে। (সুরা জিলজাল, ৬-৮)
রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘তোমার ইমানকে খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ৭৮৪৪)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘কোনো ভালো কাজকে কখনোই তুচ্ছজ্ঞান কোরো না। এমনকি তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় সাক্ষাৎ করার ক্ষেত্রেও।’ (সহিহ মুসলিম ১৪৪)
হজরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেনম যে ব্যক্তি সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পাঠ করে তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ করা হয়। (তিরমিজি ৩৪৬৪)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা বলা সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছেও অধিক পছন্দনীয়। সেটি হলো, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম। (বুখারি ৬৪০৬)
সদকায়ে জারিয়াহ : রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়; কিন্তু তিনটি জিনিস বন্ধ হয় না- সদকায়ে জারিয়াহ, ওই ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়; সুসন্তান, যে তার মৃত বাবার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি : ১৩৭৬)
সুরা ইখলাছের ফজিলত : রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কি কেউ প্রতি রাতে কোরআন শরিফের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অক্ষম? তাহলে সে প্রতি রাতে সুরা ইখলাছ পড়বে। তাহলে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতের সওয়াব পাওয়া যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ২৩৫৫৪)
জুমার নামাজ : হজরত আউস ইবনে আউস আস্সাকাফি রা. বলেন, আমি রাসুল সা. -কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করবে, অতঃপর কোনো রকম যানবাহনে না চড়ে হেঁটে আগে আগে মসজিদে যাবে, ইমামের নিকটবর্তী বসবে, চুপ থাকবে এবং অনর্থক কথা বলা থেকে বিরত থাকবে, তবে তার জন্য বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত প্রতি কদমে এক বছরের রোজা ও কিয়ামুল লাইলের সওয়াব লেখা হবে। (আবু দাউদ : ৩৪৫)
জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত : হজরত উসমান বিন আফ্ফান রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতে আদায় করে, সে অর্ধরাত্রি ইবাদতের সাওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি এশা ও ফজর নামাজ জামাতে আদায় করবে, সে পুরো রাত ইবাদতের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ : ৫৫৫)
হজরত আবু উমামা রা সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি হেঁটে নামাজ পড়তে যাবে, সে হজের সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজের জন্য হেঁটে যাবে, সে নফল ওমরাহর সওয়াব পাবে।’ (আল মু’জামুল কাবির : ৭৫৭)
এশরাক নামাজের ফজিলত : হজরত আনাস রা. সূত্রে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকিরে থাকে, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, সে পরিপূর্ণ একটি হজ ও ওমরাহর সওয়াব পাবে। (তিরমিজি : ৫৮৬)
গোপনে নফল পড়ার ফজিলত : রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘জনসম্মুখের তুলনায় লুকিয়ে নফল নামাজ পড়ার মধ্যে ২৫ গুণ বেশি সওয়াব।
আরএম/