শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বাবরি মসজিদ রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে 'মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড'

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: অযোধ্যা মামলায় ভারতে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টেই আবেদন করতে যাচ্ছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (এআইএমপএলবি)। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই অযোধ্যা রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হবে। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের আইনজীবী জিলানি এ কথা জানিয়েছেন।

জিলানি বলেন, রায়ের টেকনিক্যাল দিকগুলোতে বিভ্রান্তি রয়েছে। তিনি বলেন, বাবরি মসজিদে রামের মূর্তি বসানো নিয়ে এফআইআর দায়ের হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। সেই এফআইআরেও মূর্তি যে বেআইনিভাবে বসানো হয়েছিল, তার প্রমাণ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সাম্প্রতিক রায়ে মেনে নিয়েছে, মসজিদটি পরিত্যক্ত ছিল না। ১৮৫৭ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সেখানে নামাজ পড়া হতো। শীর্ষ আদালত এ-ও মেনে নিয়েছে, ‘মূর্তিটি জোর করে এবং বেআইনিভাবে বসানো হয়েছিল।’ তাহলে মূর্তি বসানোই যেখানে ‘বেআইনি’, সেই মূর্তি কি দেবতার মর্যাদা পেতে পারে? প্রশ্ন তুলেছেন জিলানি।

জিলানি বলেন, ‘হিন্দু রীতি অনুযায়ী, কোনো মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এবং মন্দিরের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠা না পাওয়া পর্যন্ত কোনো মূর্তি শুধুই ‘মূর্তি’। তাতে কোনো প্রাণ থাকে না। এই অবস্থায় বাবরি মসজিদে জোর করে বসানো রামলালার মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়নি। তা দোবত্বের পর্যায়ে উন্নীতও হয়নি। তাই সেই মূর্তি দেবতা নয়। তা ছাড়া হিন্দু ধর্মে বলা আছে, কোনো দেবতা অন্যের জমি জবরদখল করতে পারবেন না। দেবতার নামে জবরদখল করা জমির মালিকানা দেবতা দাবি করতে পারেন না।

এসব যুক্তি দিয়ে হিন্দু শাস্ত্রের ‘দেবত্ব’-এর সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা আদালতে দিতে চাইছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। জিলানির প্রশ্ন, মূর্তি বসানোই যেখানে ‘বেআইনি’, সেই মূর্তি কি দেবতার মর্যাদা পেতে পারে? জিলানি বলেন, ‘১৮৮৫ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত হিন্দু রীতি-নীতি মেনে রামলালার মূর্তি পূজো হতো বাবরি মসজিদসংলগ্ন ‘রাম চবুতরা’তে। আমরা তার বিরোধিতা করিনি; কিন্তু ওই মূর্তি বেআইনিভাবে বাবরি মসজিদের মূল গম্বুজের নিচে বসানো হয় এবং তাতে মূর্তির পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও সেটি মেনে নিয়েছে। ‘অন্যের জমিতে জোর করে বসে কোনো মূর্তি দেবতা হতে পারে না।’

৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায়ে বলেছিল, অযোধ্যার মূল বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির তৈরি করা যাবে। মসজিদ তৈরির জন্য অযোধ্যাতেই পাঁচ একর জমি দেয়ার নির্দেশও দিয়েছিল আদালত।

তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের এই রায় সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড বা বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি মেনে নেয়। তারা রায় চ্যালেঞ্জ করবে না বলে জানায়; কিন্তু সুপ্রিম কোর্টেই ফের রায়কে চ্যালেঞ্জ করতে চলেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ