আওয়ার ইসলাম: চট্টগ্রামে আটককৃত আসামিদের আদালতে হাজির না করে আইন বহির্ভূতভাবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেয়া নিয়ে জেলার ১৬ থানার ওসিকে সতর্ক করেছেন আদালত।
চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর আদালতে এ সংক্রান্ত একটি আদেশে ভবিষ্যতে মোবাইল কোর্টের নামে কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের জারি করা চিঠিতে বলা হয়েছে, মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর ৬ ধারা অনুসারে, কোনো অপরাধ যা কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য, তার সম্মুখে সংগঠিত বা উদঘাটিত হয়ে থাকলে তিনি উক্ত অপরাধ তাৎক্ষণিকভাবে আমলে গ্রহণ করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, স্বীকোরোক্তির ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করে এ আইনের নির্ধারিত দণ্ড আরোপ করতে পারবেন।
কিন্তু জেলার ১৬ থানার ওসিরা আসামীদের আদালতে উপস্থাপন না করে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ইউ এন ও, এসি ল্যান্ড এর কাছে উপস্থাপন করে আইন বহির্ভূতভাবে সাজা দেয়ার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। তবে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সাজা দেয়ার কথা অস্বীকার করেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, মোবাইল কোর্টে পুলিশ ধরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যায়, এ বিষয়টা সঠিক নয়। আমাদের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলবো যে এরকম কিছু নজির হলে তা যেন ভবিষ্যতে আর না হয়।
মোবাইল কোর্টের নামে উপজেলাগুলোতে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে উল্লেখ করে সনাকের সভাপতি বলেন, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এমন একটি আদেশ দিয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
সনাক সভাপতি আখতার কবির চৌধুরী বলেন, এরকম কিছু হলে এই চিঠির পরে অন্তত তারা সংশোধন হবে।
অন্যদিকে আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতি সাবেক সভাপতি মো. সালেহউদ্দিন হায়দার সিদ্দিকী বলেন, শৃংখলা যদি রক্ষা করতে হয়, আমাদের সবার উচিত আইনকে মেনে চলা।
২০১৬ সালের এমন একটি ঘটনায় ইউএনও এবং ওসির বিরুদ্ধে হাইকোর্ট শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আদেশ দিয়েছিলেন, যা সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকলের জন্য প্রযোজ্য বলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সতর্ক বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
আরএম/