আওয়ার ইসলাম: বিতর্কিত সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস বা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ‘ইসকন’ নিয়ে ভোলায় হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। আলেম-ওলামা ও হিন্দু নেতাদের পাল্টাপিাল্টি অভিযোগ ও আল্টিমেটামের মধ্য দিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে ।
ভোলার সার্কুলার রোডে বির্তকিত জমিতে ইসকনের সাত দিনব্যাপী সমাবেশের ঘোষণার পর নতুন করে এ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ইসকনের ওই সমাবেশ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জেলার শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম বিক্ষোভ করেছে। অপরদিকে শহরের সার্কুলার রোডে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপনে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন হিন্দু নেতারা।
ইসকনের ওই সমাবেশ বন্ধে গত বুধবার (২১ আগস্ট) বিকালে ভোলা শহরের হাঠখোলা জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। যদিও ইসকনের দাবি, সমাবেশ নয় বরং শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন করবে ইসকন।
বুধবারের সমাবেশে জেলার মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা তাজউদ্দিন ফারুকি, মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা তরিকুল ইসলাম, মাওলানা গোলাম মোর্শেদ, মুফতি আবদুল মমিন, হাফেজ মাওলানা ইব্রাহিম খলিল প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ইসকন কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌম বিনষ্ট করতে চায়। যার প্রমাণ কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে মুসলমান শিক্ষার্থীদের মাঝে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি দেয় ইসকন। এ সময় কোমলমতি মুসলমান শিশুদের খাওয়ার পূর্বে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করে।
তারা বলেন, এছাড়াও দেশের বেশ কয়েকটি দেশ বিরোধী কার্যক্রমে ইসকনের সম্পৃক্ততা আছে। এই উগ্রবাদী সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি স্বরুপ। তাই অবিলম্বে এই উগ্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
বক্তরা আরও বলেন, ভোলা শান্তির এলাকা। এখানে বহিরাগত কেউ শান্তি বিনষ্ট করতে এলে তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। এ সময় তারা ভোলা সার্কুলার রোডে অনুষ্ঠিতব্য ইসকনের কার্যক্রম বন্ধের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
[caption id="" align="alignnone" width="730"] ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন মুসল্লিরা[/caption]
এদিকে, সার্কুলার রোডে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপনে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ ইসলামী নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারক লিপি দিয়েছে হিন্দু নেতারা।
হিন্দু নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ভোলা শহরের সার্কুলার রোডে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপনে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে হিন্দু নেতারা বুধবার সকালে পরিস্থিতি জানতে ঘটনাস্থলে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে কে লাঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভা করেছেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। এছাড়া এর সাথে জড়িতদের বিচার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
পাশাপাশি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে পুরো জেলাব্যাপী শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী ও দূর্গোউৎসব পালনের সকল আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ করে দিবেন তারা।
এই ঘটনায় ভোলায় মুসলিম ও হিন্দু নেতাদের একে অপরের আল্টিমেটামে উত্তেজনা বিরাজ করছে গোটা জেল জুড়ে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন সচেতন মহল।
আরএম/