সাইমুম সাদী । ।
আশেপাশের আত্মীয় স্বজন, মাওলানার কলিগ সবাই ছি ছি করতে লাগল, আপনি আলেম হয়ে মেয়েকে কিভাবে ডাক্তারি পড়াচ্ছেন? লজ্জা থাকা উচিত ছিল। আর কিছু না পারলে অন্তত মহিলা মাদ্রাসায় দিতে পারতেন,তাহলে তো অন্তত আলেমা হতে পারত।
কয়েকদিন পর মাওলানার বন্ধু আরেক মাওলানার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হল। নিয়ে যাওয়া হল হাসপাতালে। হাসপাতালে পুরুষ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন করে বাচ্চা প্রসব করানো হল।
নিজের ডাক্তারি পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে বন্ধুর নবজাতক বাচ্চাকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন মাওলানা। বাচ্চার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বন্ধুকে বললেন, আশা করি বুঝতে পেরেছ কেনো মেয়েকে ডাক্তারি পড়াচ্ছি।
বন্ধু নিরব। বন্ধু-পত্নী পর্দার আড়াল থেকে বললেন, উনাকে কিছু বলে লাভ নাই, আমার এই বাচ্চাটিকে বড় হলে আমি ডাক্তারি পড়াব ইনশাআল্লাহ।
গল্পটি কল্পিত। কিন্তু এই গল্পের বাস্তবতা আমাদের চারপাশে বিরাজমান।
আলেম ফ্যামিলি থেকে মহিলা ডাক্তার জরুরি। মহিলা মাদ্রাসায় যেসব মেয়েরা মেধাবী তাদেরকে সেভাবেই গড়ে তোলা উচিত যেন দাওরার পাশাপাশি ডাক্তারি পড়ার উপযোগী হতে পারে। দাওরা শেষ করে ডাক্তারি কোর্সে ভর্তি হতে পারে। আর না হোক অন্তত গাইনি এবং ডেন্টাল বিভাগে পরিকল্পিত ভাবে ভর্তি করাতে হবে।
কোন দ্বীনদার ফ্যামিলির মেয়ে কিংবা মাদ্রাসা শিক্ষিত মেয়ে যদি ডাক্তারি পড়তে চায় তার ব্যায়ভার বহন করার জন্য বিত্তশালীদের এগিয়ে আসা জরুরী।
আল্লামা আবুল হাসান আলী নদভী রহ, এর কোন এক রচনায় পড়েছিলাম, কোন মুসলিম জনপদে যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা ডাক্তার না থাকে তাহলে সেখানকার অধিবাসী সকলেই গোনাহগার হবেন। কাজটাকে তিনি ফরজে কেফায়া বলে উল্লেখ করেছিলেন।
(লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেওয়া)