ড. তুহিন মালিক ।।
প্রথমে তারা আপনাকে মসজিদ, মাদরাসা, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক বিরোধী আন্দোলনে নামালো।
এরপর যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ইসলামকে গালাগালি শুরু করালো।
জাতিকে পরিস্কার দুই ভাগে বিভাজন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ধর্মীয় বিদ্বেষ, জাতিগত ও ধর্মীয় ঘৃণার প্রসার-প্রচারনা শুরু করালো।
বিভক্ত জাতির গণতন্ত্রের হত্যার জন্য আপনাকে চিরস্থায়ী ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে ৫ই জানুয়ারির একদলীয় নির্বাচন করালো।
যুদ্ধাপরাধী ও মৌলবাদী ইস্যুর পর নতুন এক জঙ্গি ইস্যু তৈরি করে দেশ-বিদেশে রাষ্ট্রকে উগ্র মুসলিম জঙ্গি রাষ্ট্রের তকমা দেয়া হলো।
বিনিময়ে মিডনাইট ভোটের সরকার উপহার দিলো।
প্রতিদান রক্ষা করতে গিয়ে আপনি ট্রানজিট, বানিজ্য, রেমিটেন্স, বন্দর থেকে শুরু করে সবকিছু এমনিভাবেই উজাড় করে দিলেন যে, শেষ পর্যন্ত আপনাকেই বলতে হলো- ‘ভারতকে যা দিয়েছি আজীবন মনে রাখবে।’
রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টর থেকে শুরু করে আপনার নিরাপত্তার ভার পর্যন্ত তাদের হাতে তুলে দিয়ে আপনার আনুগত্য প্রদর্শনে কোন কমতিই করলেন না।
গণহারে খুন, গুম, মামলা, হামলা চালালেন আপনার সমালোচকদের বিরুদ্ধে।
আপনার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত গোটা জাতি নিরবে সহ্য করেছে তাদের সর্বময় দাপট।
দুধ কলা দিয়ে পুষে আপনার রাজনৈতিক বিরোধী ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে তাদেরকে ব্যবহার করেছেন। তার জন্য তাদেরকে যেমন দিয়েছেন সর্বময় ক্ষমতা, তেমনি দিয়েছেন সর্বময় দায়মুক্তি।
পীযূষরা যখন দাড়ি টুপি ও টাখনুর উপরে কাপড় পড়াকে জঙ্গি বলে একযোগে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে। আপনি তখন নিশ্চুপ!
ইকসন যখন তাদের ধর্মীয় বাণী পড়িয়ে স্কুলের মুসলিম বাচ্চাদের প্রসাদ খাওয়ালো। আপনি তখন নিশ্চুপ!
যখনই তারা কোন অপরাধ করেছে আপনার সাজানো প্রশাসন ও মিডিয়া দিয়ে সেটাকে মিথ্যা প্রমান করে উল্টা সেই দায়ভার সংখ্যাগরিষ্ঠের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন।
অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠের সেন্টিমেন্টকে ধরে রাখতে আপনাকে মদিনা সনদে দেশ চালানো, ওলী-আউলিয়া, কওমী জননী, তাহাজ্জুদ, সকালে কোরআন না পড়ে কাজ শুরু না করা, আপনার দোয়ায় খেলায় জয়ী হওয়া... ইত্যকার নাটক করতে হয়েছে।
দিনশেষে আপনি শুধু ম্যানেজারই রয়ে গেলেন, মালিকানা পেলেন না! কারন, মালিককে দেয়ার মত আর কিছুই যখন অবশিষ্ট থাকে না, ম্যানেজারের তখন আজকের মত এই অবস্থাতেই পড়তে হয়।
পুনশ্চ- হ্যাঁ, আপনার অন্ধ লোকদেখানো গুণগ্রাহীরা আমার এই বক্তব্য দেখে আমাকে আবারও রাজাকার, রাষ্ট্রদ্রোহী বলবে। আপনারা তো পারেন শুধু শহীদুল আলম, মাহমুদুর রহমান, মাহফুজ আনাম, মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর তুহিন মালিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা করতে!
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)