জাকারিয়া কাতেবী ◊
বাংলা একাডেমির আধুনিক ব্যবহারিক অভিধানে ধর্ষণের অর্থ লিখেছেন, অত্যাচার বা বলাৎকার। অর্থাৎ জোরপূর্বক কাউকে যেনা অপকর্ম করাকেই আমরা ধর্ষণ বুঝি। আর যে ব্যক্তি ধর্ষণ করে তাকে ধর্ষক বলে।
বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, অধ্যক্ষ, শিক্ষক, ইমাম, চিকিৎসকসহ এমন কোনো ভদ্র ও অভদ্রলোক আর বাকি নেই এ শব্দের মেসদাক কারক হওয়া থেকে।
নাস্তিক ও তাদের সহযোগী কিছু কিছু সংগঠনের ইসলাম বিদ্ধেষী কিছুলোক তা মাদরাসার উপরে চাপাতে চেষ্টা করে যাচ্ছে অনবরত,বিষেশ করে কওমি মাদ্রাসার উপর। তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন, অর্থাৎ আস্তে আস্তে তাও বৈধ করার চেষ্টা। যদিও সমস্যাটা ব্যাপক। বলতে গেলে পূরা দেশব্যাপী।
কিভাবে প্রতিনিয়ত এমন জঘন্য ঘটনা বাড়ছে! এখন কি মানুষের যৌন চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে? না। কারণ বলতে, এর পিছনে কারণ দেখতে হলে আরেকটু কয়েক বছর আগের আলোচিত একটা শব্দের আলোচনা করতে হবে। তা হলো ইভটিজিং।
ইভ টিজিং প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি, পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করা। এটি তারুণ্যে সংঘটিত একধরনের অপরাধ। এটি এক ধরনের যৌন আগ্রাসন যার মধ্যে রয়েছে যৌন ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য, প্রকাশ্যে অযাচিত স্পর্শ, শিস দেওয়া বা শরীরের সংবেদনশীল অংশে হস্তক্ষেপ।
কখনো কখনো একে নিছক রসিকতা গণ্য করা হয় যা অপরাধীকে দায় এড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।অনেক নারীবাদী সংগঠন আরো উপযুক্ত শব্দ দিয়ে ইভ টিজিংকে প্রতিস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে ইভ শব্দের ব্যবহার নারীর আবেদনময়তাকে নির্দেশ করে যে কারণে উত্ত্যক্ত হওয়ার দোষ নারীর উপর বর্তায় আর পুরুষের আচরণ আগ্রাসনের পরিবর্তে স্বাভাবিক হিসেবে ছাড় পায়।
ইভ টিজাররা নানান সৃজনশীল কৌশলে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে থাকে। ফলে এ অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন। এমনকি অনেক নারীবাদী একে ‘ছোটোখাটো ধর্ষণ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এ ছিল ইভটিজিং এর আলোচনা।
এখানেই শেষ নয় কারণ বের করতে হলে আরেকটা পুরানো শব্দের আলোচনা করতে হবে। তা হল প্রেম বা ভালোবাসা। পৃথিবীর শুরু থেকে এ ভালোবাসা ছিল এখনো আছে এবং থাকবে। আলোচনা করতে চেয়েছিলাম বৈধ প্রেম- ভালোবাসার নয় বরং অবৈধ প্রেম ও অবৈধ ভালোবাসার।
তাও আবার নতুন নয়। পার্থক্য এটুকুই, আজ থেকে ২/১ বছর আগেও অবৈধ ভালবাসা ও অবৈধ সম্পর্ক করা আছে লজ্জা বা আইব মনে করত আর এখন লজ্জা বা আইব মনে করা দূরের কথা, এখন তা নিয়েও ফেসবুকে পোস্ট করে।
ধর্ষণের কারণ বা ভূমিকা এখান থেকেই শুরু। যখন থেকে অবৈধ ভালবাসা বা অবৈধ সম্পর্ক গড়াকে লজ্জা বা আইব মনে করা হচ্ছে না, তখন থেকেই ধর্ষণের ভূমিকা শুরু হয়েছে। যা এখনো লজ্জা বা আইব মনে করা হয় না। এমনকি প্রশাসনিকভাবে ও তা অপরাধ বলে গণ্য নয়। যার কুফল আমরা বর্তমানে তিলে তিলে ভুগতেছি।
তাই ধর্ষণ বন্ধ করার চেষ্টা করলে হবে না, তাতে আমরা সফল হবো না। ধর্ষণ বন্ধ করতে চাইলে অবশ্যই দর্শনের ভূমিকা থেকেই বন্ধ করতে হবে।
তাইতো আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে কারীমের সূরা বনী ইসরাঈল ৩২ নম্বর আয়াতে এরশাদ ফরমান, ولا تقرب الزنا"তোমরা যেনা-ব্যাবিচার( তথা ধর্ষণের) ভূমিকাতেও যেও না"।
তাই ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে আগে অবশ্যই দর্শনের ভূমিকা অবৈধ ভালোবাসা অবৈধ সম্পর্ক কি অপরাধ বলে গণ্য করতে হবে, প্রমাণ হলে শাস্তির আইন করতে হবে এবং ধর্ষণের কঠোর আইন ও দ্রুতসময়ে কার্যকর করতে হবে। তখনই আশা করা যায় ধর্ষণ ক্রমান্বয়ে কমে আসবে ইনশাআল্লাহ।
-এটি