আওয়ার ইসলাম: ইসলামে বিয়ের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের মধ্যকার যৌন সম্পর্কের অনুমতি রয়েছে। তবে মাহরাম বা নিকটাত্মীয়দের সাথে বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। মাহরাম বা নিকটাত্মীয়দের সাথে বিয়েকে কেন অবৈধ করা হয়েছে তার নিগুঢ় রহস্য একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। তবে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা যুক্তির বিচারে উত্তীর্ণ ও বিবেক সমর্থিত।
মানুষ মাত্রই এমন কিছু আত্মীয় থাকে যাদের সাথে মানুষের সুস্থ স্বভাব দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করতে এক রকমের অস্বসস্তি ও ঘৃণাবোধ করে। তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলতে সে স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। এ কারণেই ধর্মহীন নাস্তিকরাও শুধুমাত্র বিবেকের তাড়নায় মা-বোন, কন্যা, পুত্রবধূ, শাশুড়ি, খালা-ফুফু, দাদী-নানী প্রমুখ আত্মীয়-স্বজনের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়তে লজ্জাবোধ করে।
আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন- তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের ১. মাতা, ২. তোমাদের কন্যা, ৩. তোমাদের বোন, ৪. তোমাদের ফুফু, ৫. তোমাদের খালা, ৬. ভ্রাতৃকণ্যা; ৭. ভগিনীকণ্যা, ৮.তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, ৯. তোমাদের দুধ-বোন, ১০. তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, ১১. তোমরা যাদের সঙ্গে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে।
যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, ১২. তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং ১৩. দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকরী, দয়ালু। এবং ১৪. অন্যের বৈধ স্ত্রীকে বিবাহ করা হারাম।
মানব ইতিহাসে স্বভাব বিরোধী ও চূড়ান্ত লজ্জাকর অল্প কিছু উপমাই পাওয়া যায় যারা সুস্থ-স্বাভাবিক এ বোধ-বিশ্বাসের দেয়ালটুকুও ভেঙ্গে ফেলতে চেষ্টা করেছে। এ ক্ষেত্রে তারা কোন লজ্জাবোধই করেনি। কিন্তু সমাজ-সভ্যতা এদেরকে সর্বদা ঘৃণা ও হেয় দৃষ্টিতেই দেখেছে।
দ্বিতীয়ত এ জাতীয় নিকটাত্মীয়ের সাথেও যদি বিবাহে আবদ্ধ হওয়ার নিষিদ্ধতার দেয়াল না থাকে, তা হলে কোন স্বামীই নিজের স্ত্রীর সম্ভ্রমের ক্ষেত্রে কারও উপর ভরসা করতে পারবে না। নিষিদ্ধতার এ দেয়ালটুকু আছে বলেই মানুষ স্বভাবগত ভাবেইে স্ত্রীদের ইজ্জত-সম্ভ্রমের ক্ষেত্রে মাহরাম আত্মীয়ের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারে। যদি এ দেয়ালটুকুও ভেঙ্গে ফেলা হয়, তা হলে সর্বক্ষণ পাশাপাশি অবস্থানরত বাবা-মেয়ে, পত্রবধূ-শশুড়, ভাই-বোন প্রমুখ নিকট আত্মীয়দের মাঝে পরিণত হবে পশুর সমাজ-স্বভাবে।
তৃতীয়ত আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও একথা স্বীকার করেছেন, একান্ত কাছের বংশীয় আত্মীয়ের সাথে যদি দাম্পত্য জীবন গড়ে উঠে, তা হলে এ দাম্পতি থেকে যেসব সন্তান-সন্ততি জন্ম নেয় তারা অস্বাভাবিকতা ও মানসিক ভারসাম্যহীনতা সহ নানা রকমের জটিল ও কঠিন রোগের শিকার হয়।
-এএ