আওয়ার ইসলাম: ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
এখনই মুসলিম প্রধান বাংলাদেশ সরকারের উচিত পারস্পরির আলোচনা এবং জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর উদ্যোগে ভারতসহ উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ও মুসলিম নিধন এবং বরগুনায় রিফাত হত্যাসহ দেশব্যাপী চলমান হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ।
তিনি বলেন, ভারতে যখন মুসলিম নির্যাতনের ষ্টিমরোলার চলছে এমন অবস্থায় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের আরও উসকে দিয়েছেন বিজেপি নেত্রী সুনীতা সিং।
তিনি বলেছেন, ‘হিন্দু পুরুষদের উচিত মুসলিম মেয়েদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণ করা’।নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এমন কথা বলেছেন বিজেপির মহিলা মোর্চার এই নেত্রী। তার এমন বক্তব্য সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে ক্ষুব্ধ করেছে। এছাড়াও বাইক চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে গত ২৬ জুন শানাউল শেখ নামে ২৪ বছরের এক যুবককে বেধর পেটানো হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শানাউলকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ-এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, আমরা দেখেছি টুপি পরার কারণে ৩০ জুন‘১৯ তারিখে ১৬ বছরের এক মুসলিম কিশোরকে মারধর করা হয়েছে। দেশটির উত্তরপ্রদেশের কানপুর শহরে মোহাম্মদ তাজ নামের এক কিশোর শুক্রবার জুমা’র শেষে বাসায় ফিরছিল।
এ সময় তাজের টুপি খুলে ফেলে দেয়া হয়।একই সঙ্গে তাকে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতেও বাধ্য করা হয়। কিন্তু তাজ অসম্মতি জানালে ওই যুবকরা বেধড়ক মারধর করে। অথচ মুসলমানরা সমগ্র ভারতবর্ষ শাসন করার সময় জবরদস্তি করে মুসলমান হতে বাধ্য করলে ভারতে কোন হিন্দুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেতনা।
আমরা প্রত্যক্ষ করেছি চলতি সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণার পার্ক সার্কাস এলাকায় নির্যাতনের শিকার হলেন হাফিজ মুহম্মদ শাহরুখ হালদার নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক। ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান না দেওয়ায় ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে তাকে। এছাড়াও গত ২৮ জুন গুজরাটে ‘জয় শ্রী রাম’ না বলায় ৭০ বছরের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে।
সম্প্রতি ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের কোনো ধর্মীয় স্বাধীনতা নেই বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে রিপোর্ট দিয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় তা প্রত্যাখ্যান করেছে। অথচ তাদের অপকর্মের খবর বিশ্বের কোথাও অজানা নেই।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভারতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধ না হলে বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে বাধ্য হবে।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল করীম আকরাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আব্দুজ্জাহের আরেফী, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল।
কেন্দ্রীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক, শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, কেন্দ্রীয় আলিয়া মাদরাসা সম্পাদক সাইফ মুহাম্মাদ সালমান ও কেন্দ্রীয় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক, মাহমুদুল হাসান-সহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
-এটি