আওয়ার ইসলাম: ভারতের লোকসভায় সে দেশের মুসলিমদের জন্য ‘তিন তালাক বিরোধী বিল’ উত্থাপনের খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
তিনি বলেছেন, এটা জাতিসংঘের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও ঘোষণার মারাত্মক লঙ্ঘন।
আজ (২৩ জুন) রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ভারতে মোদির সরকার মুসলমানদের স্বাভাবিক জীবন যাপন ও নিরাপত্তাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অথচ তারাই কিনা তিন তালাক প্রসঙ্গ সামনে এনে মুসলিম নারীদের প্রতি অতিদয়ালু ভাব দেখাতে চায়।
বিজেপি সরকার মূলত মুসলমানদের সামাজিক ও পারিবারিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে দিতেই এ বেআইনী ও মানবাধিকার বিরোধী উদ্যোগ নিয়েছে। এটা সরাসরি ইসলামের বিধিবিধানের বিরুদ্ধে বিজেপির ধর্মীয় আগ্রাসন। আমরা বিজেপির এমন উদ্যোগের তীব্র নিন্দা করি ও প্রতিবাদ জনাই।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, সামাজিক ও পারিবারিক কাঠামোকে রক্ষার লক্ষ্যে ইসলাম ব্যভিচারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। অপরদিকে সাবালক নারী-পুরুষের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের পদ্ধতিকে অত্যন্ত সহজ করেছে।
এ বৈবাহিক সম্পর্কে কখনো স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অনাকাঙ্খিত গভীর জটিলতা তৈরি হলে, যখন তাদের একসাথে থাকাটা কারো জন্যই কল্যাণকর বিবেচিত না হবে, তখন বিচ্ছেদের জন্য তালাকের নিয়মও রেখেছে ইসলাম।
তিনি বলেন, কিন্তু এ তালাকের ক্ষেত্রে ইসলামে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বারবার হুঁশিয়ারী দিয়েছে। পুরুষরা নারীদের তুলনায় সুস্থির। তাই তালাকের অধিকারটা স্বামীর উপর দেয়া হয়েছে। এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, সর্বাবস্থায় ধৈয্য, সহনশীলতা, ক্ষমা এবং বৈবাহিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টার মধ্যেই কল্যাণ, রহমত ও বরকত নিহীত। অপরদিকে স্ত্রীদের জন্যও একান্ত নিরুপায় ক্ষেত্রে বিচারকের স্মরণাপন্ন হয়ে বৈবাহিক সম্পর্কে ফায়সালা কামনার সুযোগ রাখা আছে। ইসলাম এখানে অত্যন্ত সুন্দর এক ভারসাম্য বজায় রেখেছে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ভারত জুড়ে বিজেপি কর্তৃক প্রতিনিয়ত মুসলমানদের নাগরিক মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাম্প্রদায়িক অধিকারের উপর হামলার হার দিন দিন ভয়ানক মাত্রায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মুসলমানদের উপর জোর খাটানো হচ্ছে হিন্দুত্ববাদের স্লোগান গান দিতে। এই মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপিই কিনা মুসলিম নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দরদী হয়ে ওঠেছে। এটা স্রেফ ধোঁকা, প্রতারণা এবং মুসলিম নারীদের পরিবারকে অশান্তিময় করা, পুরুষদেরকে বিবাহ থেকে দূরে রাখা এবং ব্যভিচারকে ছড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়।
তিনি বলেন, আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বন জানাই, অবিলম্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ বন্ধ করুন। মুসলমানদেরকে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্মকর্ম পালন করতে দিন। তাদের সাংবিধানিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করুন। ইসলামী শরীয়ত বিরোধী তিন তালাক বিল সংসদ থেকে প্রত্যাহার এবং এ সংক্রান্ত নির্বতনমূলক ও ইসলামবিরোধী সকল আইন বাতিল করুন।
-এএ