রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

আসামের নাগরিকদের সঙ্গে ন্যায়বিচারের আহ্বান মাহমুদ মাদানির

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: ভারতের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সেক্রেটারি ও সাবেক এমপি মাওলানা মাহমুদ মাদানি আসামের নাগরিকদের সঙ্গে ন্যায় বিচারের আহ্বান জনিয়েছেন।

গতকাল ভারত সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গাগাই ও বিচারপতি রোহান্টন ফালীর যৌথ ব্রাঞ্চ আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) বিষয়ে শুনানি করেছে।

এ সময় আসাম সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার, ও এনআরসি কো-অর্ডিনেটরকে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা আগামী ৩১ জুলাই'১৯ তারিখে জমাদানের আদেশ করা হয়েছে।

সুপ্রিমকোর্ট জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে আর দেরী করা হবে না। এদিকে আদালতের এ আদেশ জারী করার পর স্থানীয় সরকারী সকল ডিমার্টমেন্টের কর্মকর্তাবৃন্দ চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।

এদিকে গতকাল বুধবার (০৯ মে) এনআরসির কো-অর্ডিনেটর মিস্টার প্রতীক হাজীলা আদালতকে জানিয়েছেন যাদের তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে তাদের থেকেও প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কিন্তু আদালতে যখন এ ব্যাপারে শুনানি হয় তখন মামলাকারীরা অনুপস্থিত ছিলো। তাদের ব্যাপারে আদালত কি ব্যবস্থা নিবে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গাগাই বলেছেন, আপনারা নিঃসঙ্কোচে আইনের মাধ্যমে এদের মোকাবেলা করুন। সাথে সাথে ন্যায়ের সাথে বিষয়টির সমাধান করুন। কারো সাথে অন্যায় আচরণ করা থেকে বিরত থাকুন।

এদিকে আদালতের জারী করা আদেশ ও মিস্টার প্রতীক হাজালির আপিলের প্রতিক্রিয়ায় মাওলানা মাহমুদ মাদানী বলেছেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অথচ মামলাকারীরা আদালতে অনুপস্থিত রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও নিয়ম বহির্ভূত। আমরা চাই আসাম প্রদেশের নাগরিকদের সাথে ন্যায়বিচার করা হোক।

আর জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আসাম প্রদেশের সভাপতি মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল বলেছেন, এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। এরকম অনৈতিক মামলাকে আদালত খারিজ করবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

গতকালকের শুনানিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রদেশ সভাপতি সাবেক পার্লামেন্ট মেম্বার বদরুদ্দীন আজমল বলেছেন, যেসব মামলা প্রমাণ করার জন্য মামলাকারীরা আদালতে উপস্থিত হচ্ছে না। সেসব মামলাকে নিষ্পত্তি করা উচিত। এবং মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

তিনি আরো বলেন, যদি উপরোক্ত মামলা সংক্রান্ত কর্মকর্তাবৃন্দ আদালাতের রায় মোতাবেক ন্যায়ের সাথে কাজ না করে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে যাবো।

কারণ একজন লোক অনেক কষ্টের পর নিজের নাম এনআরসি তালিকায় উঠিয়েছে। আর এখন কেউ তার বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে পেরেশান করার চেষ্টা করে তাহলে নিঃসন্দেহে এটা অন্যায়। এরকম অন্যায় কাজকে আদালত সমর্থন দিবে না বলেই আমরা মনে করি।

তিনি আরো বলেন, এ রকম একটি সন্দেহ আমাদের পূর্ব থেকেই ছিলো যে, কিছু দুষ্ট মানুষ নিরপরাধ মানুষের নামে মামলা দায়ের করে তাদেরকে পেরেশান করবে।

বর্তমানে এনআরসি সমন্বকারী নিজেরাই আদালতে স্বীকার করে নিয়েছে যে, মামলাকারীরা আদালতে উপস্থিত হয়নি। এর দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, মামলা কিছু ফরমায়েশি লোকদের থেকে হয়েছে। এজন্য ইনসাফের চাহিদা এটাই হবে যে, কোনো বিশ্লেষণ ছাড়াই মামলা খারিজ করে দেয়া হোক।

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম এনআরসির তালিকা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় তালিকা ৩০ জুলাই ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়েছে। তখনো প্রায় ৪০ লাখ মানুষের নাম তালিকায় না আসায় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আসাম প্রদেশের পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করা হলে সরকার তৃতীয়বারের মতো নাম রেজিস্ট্রি করার সুযোগ দেয়। আবার ভুলক্রমে কারো নাম এনআরসিতে যোগ হলে তাদের নামে মামলা করারও অনুমতি দেয় আদালত।

সর্বশেষ ৪০ লাখের মাঝে ৩৩ লাখ লোক নিজেদের দাবী আদালতে উপস্থাপন করেছে। যার প্রক্রিয়া এখনো জারী আছে। এখন মাত্র আড়াইলক্ষ মানুষের নাম চূড়ান্ত তালিকায় আসার অপেক্ষায় রয়েছে।

কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র ২০০ লোকের বিরুদ্ধে আদালতে
মামলা করা হয়েছে। কিন্তু মামলা করার শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ এ তালিকাটি ২ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছে গেছে। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আসাম প্রদেশ ঐ সময়ই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল যে, এরা শুধু দেশের সাধারণ নাগরিকদের পেরেশান করতে চাচ্ছে। আর এখন সে সন্দেহ দৃঢ়তায় পরিণত হচ্ছে। কেননা মামলা দায়েরকারীরা আদালতে হাজির হচ্ছে না।

আজকের আদালতের শুনানির পর এ মামলার সবচেয়ে পুরাতন বাদী জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ, আসাম প্রদেশের সভাপতি ও মেম্বার অব পার্লামেন্ট মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল বলেন, আমরা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি সাইয়েদ সালমান মানসুরপুরী, সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মাহমুদ মাদানী এর তত্ত্বাবধানে আসামের জনতার জাতীয় নাগরিকত্ত্ব হকের পক্ষে লড়ছি। আমরা সুপ্রিমকোর্ট থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা করছি।

মামলাটির আদালতে শুনানির সময় জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আসামের পক্ষ থেকে সুপ্রিমকোর্টের এ্যাডভোকেট বি এইচ মালাপলি, এ্যাডভোকেট সনজে হাগরী, এ্যাডভোকেট আবুল কাসেম তালুকদার, ও এ্যাডভোকেট আই এস তপাদার উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সেক্রেটারি ডা. হাফেজ রফিকুল ইসলাম, ও মাওলানা মুঞ্জুর বেলাল নোমানিও উপস্থিত ছিলেন।

বাসিরাত অনলাইন উর্দু থেকে অনুবাদ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ