শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

মোবাইলের স্ক্রিন শিশুদের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রোকন হারুন: মোবাইল ট্যাব ও লেপটপের স্ক্রিনে খুব বেশি সময় কাটানোর ফলে শিশুরা ঝুঁকছে মারাত্মক ক্ষতির দিকে। চোখে কম দেখা, ওজন বাড়িয়ে দেয়া, এমন কি ক্যান্সারও হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বাড়ার কারণে কোলন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার, ডিম্বাশয়, প্যানক্রিরিয়া এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারসহ নানা ধরনের ক্যান্সারেও আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবন রয়েছে। ২ লাখ শিশুর ওপর গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এরচেয়েও ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, এরফলে মৃত্যুর ঝুঁকি দিনদিনি বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, গ্যাজেটগুলোর ওপর বেশি সময় তাকিয়ে থাকার কারণে পঞ্চাশ বছরের মধ্যে দৃষ্টিশক্ত হারানোর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

বিশ্ব ক্যান্সার গবেষণা ফাউন্ডেশনের গবেষকরা বলেছেন, গবেষণার এই ফলাফলগুলো খুবই উদ্বেগপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে শিশুদের মধ্যে ওজন বৃদ্ধির কারণ গবেষণা করে দেখা গেছে, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং গেম খেলার জন্য ব্যয় হওয়া সময়ের মধ্যে শিশুদের ফ্যাট বাড়ার বড় কারণ। যা কোমল পানীয় থেকো দুইগুণ বেশি ক্ষতিকারক।

ব্রিটিশ চক্ষুরোগ-চিকিত্সক অ্যান্ডি হেপওর্থ জানান, স্মার্টফোনের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় চোখের পলক কম পড়ে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় স্মার্টফোন চোখের বেশি কাছাকাছি এনে কোনো বিষয় দেখা হয়৷ তাই টানা, দীর্ঘ সময় ধরে স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট ও ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি দেখার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।

হেপওর্থ বলেন, যে যন্ত্রগুলো থেকে আলো নির্গত হয় তা চোখের জন্য শুধু ক্ষতিকরই নয়, ভয়ঙ্কর বিষাক্তও বটে৷ মাথাব্যথা, ঘাড় ব্যথাসহ মাইগ্রেনও হতে পারে৷ বর্তমান প্রযুক্তিরকালে শিশুরা যে কোনো প্রাপ্তবয়স্কের চেয়ে অনেক বেশি পারদর্শী।

শিশুদের বায়না পূরণ করতে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন স্মার্টফোন। এটি যে একজন শিশুর সুন্দর জীবন ও ভবিষ্যত অন্ধার করে দেয়া হাতিয়ার সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এই প্রজন্মের শিশুদের অনলাইন গেম, মোবাইল, ট্যাব বা ভিডিও গেমের প্রতি অতিরিক্ত ঝোঁক তাদের আঙুলের ওপর চাপ তৈরি করে চলেছে প্রতিনিয়ত। সারাক্ষণ ঘাড় গুঁজে মোবাইলে মগ্ন থাকায় কম বয়সেই স্পনডিলাইটিসের শিকার হচ্ছে শিশুরা। তাই শিশুদের আঙুল সুরক্ষিত রাখতে দূরে রাখুন টাচস্ক্রিন মোবাইল, ট্যাব ও ভিডিও স্ক্রিন থেকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোটবেলা থেকে স্মার্টফোন, ট্যাবে ভিডিও গেমসের আসক্তি শিশুদের চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাসহ নানা ধরনের মানসিক সমস্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এসবের জন্য খেলার মাঠ বন্ধ হয়ে যাওয়া, লেখাপড়ার বাড়তি চাপ, সূর্যের আলোয় শিশুর না আসা, দিগন্তে সবুজের দিকে তাকিয়ে না থাকাকেই দায়ী করা হচ্ছে।

শিশুদের যে সময় দূরের দৃষ্টি তৈরি হওয়ার কথা, সে সময়ই তারা মোবাইল ফোনের কিংবা ট্যাবের স্ক্রিনে দৃষ্টিকে আটকে রাখছে। যে কারণে দূরের দৃষ্টি প্রসারিত হতে পারছে না। বংশগত কারণেও এই ক্ষীণ দৃষ্টি হতে পারে, তবে স্ক্রিন অ্যাক্টিভিটি, রোদে খেলাধুলা না করা শিশুদের মাইয়োপিয়ার (ক্ষীণদৃষ্টি রোগ) অন্যতম কারণ।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী এক প্রতিবেদনে বলেন, এ তিষ্ঠানে প্রতিদিন গড়ে আমরা ২৫০ জন রোগী দেখি। এর মধ্যে ক্ষীণ দৃষ্টি বা মাইয়োপিয়ার আক্রান্ত শিশু (যারা দূরে দেখতে পারে না) এমন শিশুর সংখ্যা গড়ে ৫০ জন।

যে শিশুরা দূরেও কম দেখে কাছেও কম দেখে, এ ধরনের ক্রটিকে বলা হয়—‘হাইপারমেট্রপিয়া’, আরেক ধরনের চোখের সমস্যা নিয়ে শিশু আসে, যাদের আমরা বলি ‘এস্টিগমেটিজম’, যাদের সিলিন্ডার পাওয়ার বা এঙ্গেল পাওয়ারে ক্রটি থাকে। এই তিন ধরনের ক্রটি নিয়ে শিশুরা আমাদের কাছে বেশি আসে।

প্রযুক্তি ব্যবহারে গ্রামের শিশুদের চেয়ে শহরে শিশুরা এগিয়ে। অনেক বেশি গ্যাজেট ব্যবহার করছে শহরের শিশুরা। যারফলে গ্রামের চেয়ে শহরের বাচ্চাদের এ ধরনের চোখের সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

টেকনোলজি শিশু ব্যবহার করবে তবে সেটা এক ঘণ্টার বেশি অবশ্যই ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ