শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

নুসরাতের হত্যাকারীদের পক্ষ নেয়ায় আ. লীগ নেতা বহিষ্কার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেওয়ায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বহিষ্কৃত ওই নেতার নাম অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল আহম্মদ সোহাগ। তিনি জেলা সদরের কাজীর বাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আবদুর রহমান বিকম জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে ন্যক্কারজনক এ মামলায় আসামিদের পক্ষ নেওয়ায় জেলা সদরের কাজীর বাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল আহম্মদ সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্তের আগেই বুধবার বুলবুলকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নূর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার উপজেলা কমিটি বসে অ্যাডভোকেট বুলবুল সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি তাকে (বুলবুলকে) জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এর আগে বুধবার ফেনী জজকোর্টে মামলার প্রধান আসামি ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ অন্য আসামিদের রিমান্ড আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন। বিচারক সাতদিনের স্থলে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় অ্যাডভোকেট বুলবুল আহমেদ সোহাগ রিমান্ডের বিপক্ষে আপিল করবেন বলে ঘোষণা দেন ও আসামির পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন।

এর আগে, বুধবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা মারা যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি।

এদিকে নিহত নুসরাতের চাচাতো ভাই মুহাম্মদ উল্লাহ ফরহাদ বলেন, নুসরাতের মরদেহ বাড়িতে আনার পর বাদ আসর সোনাগাজী মো. সাবের সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। দাদির কবরের পাশেই হবে তার শেষ শয্যা।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে রাফিকে যৌন হয়রানি করেন। এ অভিযোগে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় তার এ করুণ পরিণতি বলে জানা যায়।

গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। এ সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।

সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে রাফির ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সোমবার রাতে এজাহারে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। অন্য আসামীরা হলেন পৌর কাউন্সিলর মাকসুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নূর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

ইতিমধ্যে ওই মামলার তিন আসামী সহ অন্তত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা সহ ৭ জনকে রিমান্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া তাকে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ পদ থেকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকেও প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অন্যদিকে, গত ৭ এপ্রিল নূরে মদিনা মাদরাসার শিশু শ্রেণির ছাত্র মনির হোসেন মাদরাসা থেকে নিখোঁজ হয়। ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মসজিদ থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। পর দিন মনিরের বাবা সাইদুল হক তিনজনকে আসামি করে ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- নূরে মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল জলিল হাদী, মোহাম্মদ তোহা ও আকরাম হোসেন।

এমএম/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ