আওয়ার ইসলাম: ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলা ঘটনার এক সপ্তাহ পার হয়েছে। আজ শুক্রবার আল নুর মসজিদটি মেরামতের পর প্রথম নামাজ আদায় হয়েছে। এতে হাজার হাজার মুসল্লি অংশ গ্রহন করেছে।
মসজিদটির খতিব জামাল ফাওদা তার খুতবায় যা বলেছেন, গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এতে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে কষ্ট পেয়েছেন।
আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করেছে। কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখতে পারে।
আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না।
হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের শয়তানি মতাদর্শ এই প্রথম আমাদের আঘাত হানেনি। কিন্তু এটি আমাদের কঠিন আঘাত। এতগুলো লোককে হত্যা সাধারণ কিছু নয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সংহতি অসাধারণ।
হতাহতদের পরিবারগুলোকে আপনাদের ভালোবাসা, তাদের মৃত্যুকে বিফলে যেতে দেয়নি। তাদের রক্ত আশার বীজে পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসী ইসলামের সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন। আমাদের ঐক্যের সৌন্দর্যও।
শহীদদের উদ্দেশে বলেন, তারা কেবল ইসলামের শহীদ নন, তারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। আপনাদের হারিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ঐক্য ও তেজ জোরদার হয়েছে। আপনাদের চলে যাওয়া কেবল নিউজিল্যান্ডকেই সজাগ করেনি, বিশ্ব মানবতাকেও জাগিয়ে তুলেছে।
খুতবায় তিনি নিউজিল্যান্ডের লোকদের আপনাদের চোখ থেকে যে পানি ঝরার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এএ/