আজ মুসলিম পরিবারগুলোতে বিয়ে হয় বিধর্মীদের রীতিনীতি ও সংস্কৃতির রূপরেখায়। কেমন যেন মুসলিম সমাজও মরণব্যাধী এ অপসংস্কৃতিকে এক প্রকার নিজেদের সঙ্গে মানিয়েও নিয়েছে।
যার ফলে আজ প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েকে সঠিক সময় বিয়ে দিতে পারছেন না তার পরিববার। দম্পত্য জীবনেও নেই সুখের দেখা। এসব আযাব থেকে কেবল মুক্তি পেতে পারি সুন্নাতের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করার মাধ্যমে।
এ বিষয়ে জামিয়া রাহমানিয়া মুহাম্মদপুর, (আলী এন্ড নূর) ঢাকার শাইখুল হাদিস ও প্রধান মুফতি, মুফতি মনসূরুল হক আলোচনা করেছেন বিয়েশাদীতে পালনীয় সুন্নাতসমূহ নিয়ে। আসুন দেখে নেই বিষয়গুলো।
১. মাসনূন বিবাহ সাদাসিধে ও অনাড়ম্বর হবে। যা অপচয়, অপব্যয়, বেপর্দা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি, গানবাদ্য, ভিডিও-অডিওমুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থ্যের অধিক মহরানার শর্ত থাকবে না। সূত্র: তাবরানী আউসাত, হাদীস নং- ৩৬১২।
২. সৎ ও খােদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করে বিয়ের পয়গাম পাঠানাে। কোন সুযােগে পাত্রী দেখা সম্ভব হলে, দেখে নেয়া মুস্তাহাব। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানাের যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত, তা সুন্নাতের পরিপন্থী ও পরিত্যাজ্য। সূত্র: ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৪ : ২০০/ বুখারী হাদীস নং- ৫০৯০।
৩. শাওয়াল মাসে এবং জুমআর দিনে মসজিদে বিবাহ সম্পাদন করা। উল্লেখ্য, সকল মাসের যে কোন দিন বিবাহ করা জায়েয আছে। সূত্র: মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ১৪২৩/ বাইহাকী, হাদীস নং- ১৪৬৯৯।
৪. বিবাহের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার করে বিবাহ করা এবং বিবাহের পরে আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লােকদের মাঝে খেজুর বন্টন করা। সূত্র: বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ৫১৪৭।
৫. সামর্থ্যানুযায়ী মহর ধার্য করা। সূত্র: আবু দাউদ: হাদীস নং২১০
৬. বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল হাতে নিয়ে এই দু'আ পড়া; اللهم إني أسألك من خيرها وخير ما جبلت عليه . وأعوذ بك من شرها وشر ما جبلت عليه সূত্র: আবু দাউদ, হাদীস নং- ২১৬০।
৭. স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করবে, তারপর যখনই সহবাস-এর ইচ্ছা হয়, তখন প্রথমে নিম্নোক্ত দুআ পড়ে নেবে ; بسم الله اللهم جنبنا الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا সূত্র: মুসলিম, হাদীস নং-১৪৩৪।
বি.দ্র. উপরােক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের তাছীরে বাচ্চার ওপর কু-প্রভাব পড়ে। যেকারণে সন্তান বড় হলে তার মধ্যে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে থাকে। একসময় সে বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়। সুতরাং পিতা-মাতাকে খুবই সতর্ক থাকা জরুরী।
৮. বাসর রাতের পর দু'হাতে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী ও গরীব-মিসকিনদের সাধ্যনুযায়ী ওলীমা খাওয়ানাের আয়ােজন করা। সূত্র: মুসলিম, হাদীস নং- ১৪২৭।
আরএইচ