মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সৌদির সেবা কোম্পানির সঙ্গে হজ এজেন্সির চুক্তির নির্দেশনা মহেশখালী থানার বিশেষ অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ১১ জন আসামি গ্রেফতার বৃষ্টির সময় কাবা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় ওমরা পালনকারীদের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট গ্রাহকদের মূলধন ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না: ধর্ম উপদেষ্টা জরুরি সভা ডাকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কক্সবাজারে উৎসবমুখর পরিবেশে রোপা আমন ধান কাটা শুরু চাঁদপুর হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহর সাফল্য বগুড়ায় আন্দোলনে নিহত রিপনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত

কয়েকটি হারাম কাজ থেকে নিজেকে বাঁচান!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা ইমরান হুসাইন
আলেম ও লেখক

হারাম একটি আরবি শব্দ যার অর্থ নিষিদ্ধ। হারাম হচ্ছে এমন জিনিস যা কুরআন ও সুন্নাতের মাধ্যমে নিষিদ্ধ হয়েছে এবং এই বিষয়টা মানাই হচ্ছে মানুষের জন্য উপকারী। সেটা শারীরিকভাবেও হতে পারে আবার মানুষিকভাবেও হতে পারে। সুতরাং যেই বিষয়গুলো হারাম সেগুলো থেকে আমাদেরকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। নিন্মে কিছু হারাম বিষয়ের তালিকা তুলে ধরা হলো।

গান শোনা: গান শোনা কবিরা গুনাহ। কিন্তু আমরা অনেকে তা মানতেই রাজি না। কিন্তু বড় বড় আলেমগণ একে হারাম বলেই স্বাব্যস্ত করে থাকেন। ইমাম মুহাম্মদ রহ. জামে সগির গ্রন্থর ১৩৯ পৃষ্ঠায় বলেন, হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মত যেনো বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার থেকে মুক্ত থাকে।

নিজকে বা অন্যকে আঘাত করা:  নিজের শরীরে- গায়ে আঘাত করা। দু:খ পেলে বা কষ্ট পেলে নিজের বুকে-মুখে আঘাত করা।এটা সম্পূর্ণ হারাম। অন্যকে আঘাত করার ব্যাপারেও একই কথা। আল্লাহ বলেন,

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সুরা নিসা-২৯)

মদ ও জুয়া খাওয়া হারাম: মদ ও জুয়া ইসলামের সবচেয়ে বড় পাপগুলোর মধ্যে একটি। আল্লাহ ও তার নবী সা. আমাদের মদ খাওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানী কার্যকালাপ। এগুলো থেকে দূরে থাক, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে। (সূরা- মায়েদা, আয়াত- ৯০)

সুদ দেওয়া ও নেওয়া হারাম: রিবা (সুদ) ইসলামে কখনোই অনুমোদিত নয়। কেননা এটাও আল্লাহপাক হারাম করেছেন। সুদের মাধ্যমে মূলত সমাজে দরিদ্র বাড়ে।

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, “কিন্তু যারা সুদ খায় তাদের অবস্থা হয় ঠিক সেই লোকটির মতো যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। তাদের এই অবস্থায় উপনীত হবার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা বলে, ব্যবসা তো সুদেরই মতো।

অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার রবের পক্ষ থেকে এই নসীহত পৌঁছে যায় এবং ভবিষ্যতে সুদখোর থেকে সে বিরত হয়, সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তাতো খেয়ে ফেলেছেই এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে। আর এই নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এই কাজ করে, সে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে সে থাকবে চিরকাল।” (সুরা- বাকার, আয়াত- ২৭৫)

সিল্ক কাপড় এবং গোল্ড পরা পুরুষদের জন্য হারাম: ইসলামের প্রাথমিক যুগে পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহারের অনুমতি থাকলেও পরে তা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সা. স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন (বোখারি ও মুসলিম)।

হজরত হুবাইরা ইবনে বারিম রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আলী রা. বলেছেন, রসূলুল্লাহ সা. আমাকে স্বর্ণের আংটি ও রেশমি কাপড় ব্যবহার নিষেধ করেছেন এবং লাল গদিতে বসতে, আর যব এবং গমের শরবত পান করতে নিষেধ করেছেন। (নাসাঈ)।

হস্তমৈথুন করা হারাম: এটা ইসলামের নিষিদ্ধ একটি কাজ। এই কাজটি নিষিদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে এটি একটি শারীরিকভাবেও অনেক ক্ষতিকারক। সুতরাং সবাইকে এটা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

আল্লাহর নাম ছাড়া কোনো প্রাণী জাবেহ করা হারাম: যে কোনো পশু জবেহ করার সময়ই আল্লাহর নাম নিতে হবে। আল্লাহর নাম না নিয়ে পশু যবেহ করলে সেটা হারাম হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আপনার প্রভূর উদ্দেশে সালাত আদায় করুন এবং যবেহ করুন (সূরা- আল-কাওসার, আয়াত- ২)

একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে যবেহ করে তার ওপর আল্লাহর লানত। (সহীহ মুসলিম)

ট্যাটু লাগানো হারাম: এটা ইসলামে নিষিদ্ধ একটি বিষয়। কেননা আল্লাহপাক মানুষকে সব থেকে বেশি সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন। এই সৃষ্টির মধ্যে অন্য কিছু তৈরি করা এটা ইসলামে নিষিদ্ধ।

আত্মহত্যা করা হারাম : আত্মহত্যা মহাপাপ। এ কাজ থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহপাক বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন,

“আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে উহা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্য আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করব, আল্লাহর পক্ষে উহা সহজসাধ্য।” (সূরা-নিসা-২৯-৩০)

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ