কৌশিক পানাহি: বছর তিনেক আগে সুইজারল্যান্ডের সর্বদক্ষিণের অঞ্চল টিকিনোতে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। এবার এ প্রদেশে প্রকাশ্যে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করার জন্য এর পার্লামেন্টে আবেদন (পিটিশন) দায়ের করা হয়েছে।
মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লি নামে যে রাজনীতিবিদ টিকিনোতে বোরকা নিষিদ্ধে দাবি তুলেছিল, সেই আবার এ অঞ্চলে প্রকাশ্যে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করার জন্য পার্লামেন্টে আবেদন করেছে।
সম্প্রতি রাস্তায় মুসলমানদের নামাজ পড়ার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে টিকিনোকে ‘কিনিনিস্তান’ বলে উল্লেখ করে মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লি। এরপর নিজেকে সে ‘মূর্তিমান নিরানন্দ’ খেতাব দিয়ে জানায়, এভাবে প্রকাশ্যে নামাজ পড়া নিষিদ্ধে প্রাদেশিক পার্লামেন্টে পিটিশন দাখিল করেছি।
মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লির যুক্তি, এটা (প্রকাশ্যে নামাজ নিষিদ্ধ) জরুরি। কারণ, মুসলমানদের প্রার্থনার একপর্যায়ে এমন কিছু অস্পষ্ট বার্তা আছে যা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়।
সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পাওয়া সামি আলদীব নামে এক ফিলিস্তানীয় খ্রিস্টান আইনজীবীর পরামর্শে পার্লামেন্টে ওই পিটিশন দিয়েছে মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লি।
ইউরোপিয়ান সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য লোকাল’-এর খবর বলছে, বিস্ময় ব্যক্ত করে টিনিকোর সংসদীয় কমিটি ইতোমধ্যে মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লির পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে। এরপরও এ পিটিশন নিয়ে পরবর্তী সংসদীয় অধিবেশনে আলোচনা হবে।
সূত্রের খবর বলছে, ২০১৩ সালে বোরকা নিষিদ্ধের জন্য মভারিক গিয়োরগিও ঘিরিঙ্ঘেল্লি পিটিশন দিলে একইভাবে প্রাদেশিক পার্লামেন্ট তা খারিজ করে দেয়। কিন্তু এ নিয়ে পরে গণভোট হলে বোরকা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে সুইজারল্যান্ডের ২৬টি প্রদেশের মধ্যে টিকিনোতেই প্রথমবারের মতো এ ধরণের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। পরে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রার্থনার স্থান ছাড়া রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে কারো মুখোশ পরে বা মুখ ঢেকে চলা উচিত নয়। সরকারি কাজের ক্ষেত্রে তো নয়ই।
সুইজারল্যান্ডের ছোট প্রদেশগুলোর একটি টিকিনো। যেখানে মোট জনসংখ্যা সাড়ে তিন লাখ। আর দেশটির মোট জনসংখ্যা ৮০ লাখ যার মধ্যে চার লাখ মুসলিম।
কেপি