মুহাম্মাদ বিন খুরশিদ আলম
শিক্ষার্থী, জামিয়া রহমানিয়া সওতুল হেরা, টঙ্গী, গাজীপুর।
মুসলমান হিসেবে আমাদের ওপর মহান রবের প্রতি কিছু হক রয়েছে। ফরজ ওয়াজিব থেকে নিয়ে সাধারণ কোনো আমল এমনকি দুই টাকার দানও আল্লাহর হকের আওতাভুক্ত। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ইবাদত করি। জীবন যাপনে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করি। এ ইবাদত পালন কিংবা বিধি-বিধান মানার ক্ষেত্রে সাধ্যমত প্রচেষ্টা চালাই। এর হিসাব-নিকাশ জমা হচ্ছে অপার্থিব আমলনামায়। তবে এই জমা হওয়া কিসের ভিত্তিতে? সংখ্যাধিক্য নাকি গুণগত মানের দিক থেকে?
ব্যস্ত জীবনে যেখানে ইবাদতের অবসর দিন দিন কমে আসছে আমাদের, যেখানে কবুল হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে ভাবার সময় কোথায়?
কোরআন ও হাদিসের নির্যাস দ্বারা প্রমাণিত, ইখলাস সব আমল গ্রহণীয় হওয়ার প্রথম শর্ত। ইখলাস বিহীন কোনো আমল আসমানি দরবারে কবুলযোগ্য নয়। বরং কখনও তা বিপদেরও কারণ হয়। কোরআনে কারিমে ইখলাস প্রসঙ্গে অনেক আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। পবিত্র কোরআনের সুরা বাইয়্যিনাহ এর ৫ নং আয়াত ও সুরা জুমারের ২ নং ও ১১ নং আয়াতসহ আরও অনেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইখলাসের সাথে ইবাদতে মগ্ন হওয়ার আদেশ করেছেন।। ইখলাসের ব্যাপারে আরও সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিখ্যাত বুযুর্গ ফুজাইল। তিনি বলেন, মানুষের কারণে আমল ছেড়ে দেওয়ার নাম- রিয়া, আর মানুষের জন্য আমল করার নাম-শিরক। কিন্তু এ দু’টো থেকে রেহাই পাওয়ার নামই হচ্ছে- ইখলাস।
হাদিসে ইখলাসবিহীন আমলকারীর জন্য পরকালে মহাক্ষতি ও বিপদের সতর্কবাণী করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা যখন সব মানুষকে একত্র করবেন, তখন একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদিত কাজে অন্য কাউকে তাঁর সঙ্গে শরিক করেছে; সে যেন আল্লাহকে
বাদ দিয়ে সেই শরিকের কাছ থেকে প্রতিদান বুঝে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা সব ধরনের অংশীদার ও অংশীদারিত্ব থেকে মুক্ত।’ (ইবনে মাজাহ)
সুতরাং আমল কবুলে ইখলাসের গুরুত্ব অনুধাবনে কোরআন ও সুন্নাহরে নির্দেশ মেনা চলা জরুরি। মুসলিম উম্মাহর উচিত কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মোতাবেক শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য একনিষ্ঠভাবে ইবাদত-বন্দেগি করা।