শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আজ ভারতের রাজ্যসভায় উত্থাপিত হবে বিতর্কিত তিন তালাক বিল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তাওহীদ আদনান
ইন্ডিয়া থেকে>

আজ সোমবার ভারত পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ তথা রাজ্যসভায় উত্থাপিত হবে তিন তালাক বিল৷ উক্ত তিন তালাক বিল উত্থাপনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতীক দললো স্ব স্ব পার্লামেন্ট মেম্বারদের সকলকে রাজ্যসভায় উপস্থিত থাকার প্রতি দিয়েছে কড়া নির্দেশ৷

মূলত মুসলিম নারী বৈবাহিক অধিকার সংরক্ষণ নামক বিতর্কিত উক্ত তিন তালাক বিলটি জারি হওয়ার পর প্রথম থেকেই এই বিলের বিরুদ্ধে সরব ছিল মোদী সরকার ব্যাতিরেকে কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধী দল৷ এমনকি মোদী সরকারেও সকল পার্লামেন্ট মেম্বার পক্ষে নয় এই তিন তালাক বিলের৷

জানা গেছে, আজ রাজ্যসভায়ও বিতর্কিত এই তিন তালাক আইনের বিরুদ্ধে সরব থাকবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ অন্যান্যরা৷ কংগ্রেসের সকল পার্লামেন্ট মেম্বারকে রাজ্যসভায় জরুরি ভিত্তিতে উপস্থিত থাকতে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে৷

বিশ্লেষকদের মতে, আজ রাজ্যসভায় এ বিতর্কিত তিন তালাক বিলটির পক্ষে রায় নেয়া কষ্টসাধ্য হবে মোদী সরকারের৷ কেননা এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই তাদের৷ উপরন্তু মোদী সরকারের সকল পার্লামেন্ট মেম্বাররাও এর পক্ষে নন৷

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারী কে সি গোপাল বলেন, আজ রাজ্যসভায় কোনো ক্রমেই পাশ হতে দিবো না এই বিতর্কিত তিন তালাক আইন৷ তিনি বলেন, আমরা মোদী সরকার বিরোধী সকল দলের পার্লামেন্ট মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে আজ বাতিল করে দেবো উক্ত আইন৷

কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারী কে সি গোপাল ভারতের গণমাধ্যমকে জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর ভারত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ তথা লোকসভায় মোদী সরকার নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তিন তালাক বিল পাশ করিয়ে নিলেও আজ উচ্চকক্ষ তথা রাজ্যসভায় আমরা পাশ হতে দেবো না এই বিতর্কিত আইন৷ এখানে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো নেইই উপরন্তু তাদের সকল মেম্বারও এর পক্ষে নন৷

উল্লেখ্য, গত ২৭ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় পাশ হয়েছে সংশোধিত তিন তালাক বিল। ২৭ ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় আলোচনায় উঠেছিল তিন তালাক বিলটি৷ পরে এতে সমর্থন জানিয়েছিলেন ২৪৫ জন সাংসদ আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন মাত্র ১১ জন৷

এই তিন তালাক নামক আইনটিতে তিন তালাককে উল্লেখ করা হয়েছে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে। আইনানুযায়ী তিন তালাক প্রদানকারী মুসলিম স্বামীকে শাস্তিস্বরূপ সর্বোচ্চ ৩ বছর জেলও দিতে পারবেন বিচারক। এই আইনটিই তিন তালাক বিল নামে পরিচিত৷

লোকসভায় পাশ হওয়া উক্ত তিন তালাক বিলটিকে দেশটির বিভিন্ন সমাজের প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেছেন মুসলিম নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে। তারা মনে করেন, মুসলমানদের নির্যাতের জন্যই পাশ করা হয়েছে এমন বিতর্কিত আইন৷

তিন তালাক বিলটি নিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর লোকসভায় আলোচনা উঠলে বিরোধী দলগুলোর প্রস্তাব ছিলো, আইনটি জয়েন্ট সিলেকশন কমিটিতে পাঠানো হোক। ওখানেই পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে৷ কিন্তু মোদী সরকার তাদের মত উপেক্ষা করে বিলটি মৌখিক ভোটে পাশ করানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে৷

মোদী সরকার বিরোধী গলগুলোর প্রস্তাব উপেক্ষা করায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও এআইএডিএমকে এই দুই দলের সাংসদরা ভোটাভুটির আগেই লোকসভা ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন অধিবেশন থেকে৷ ফলে তাদের অনুপস্থিতিতেই লোকসভায় পাশ হয়ে যায় তিন তালাক বিল আইন৷

বিরোধী দলগুলোর দাবী, সদ্য সমাপ্ত হওয়া পাঁচ প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে মোদি সরকারের দল বিজেপি হেরে যাওয়ায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই বিতর্কিত এই আইন পাশ করতে উঠে পড়ে লেগেছে তারা। তবে মোদী সরকার বলছে, ন্যায় ও মানবতা রক্ষার জন্যই পাশ করেছে তারা তিন তালাক আইনটি।

সূত্র: মিল্লাত টাইমস, নিউজ ১৮

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ