আওয়ার ইসলাম : দীর্ঘদিনের জন্য স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে স্বামীরা প্রবাসে চলে যাওয়ার প্রচলন নতুন নয়। জীবিকার তাগিদে হোক, পৃথিবী দেখার নেশায় হোক আজকাল বিদেশে চাকরি করাটাকে একটা সৌভাগ্যের বিষয় হিসেবে দেখছে আমাদের মতো অনুন্নত দেশগুলোর নাগরিকরা।
বিদেশী মুদ্রায় দেশকে ধনী করা গেলেও নিজের পরিবার, স্ত্রী-সন্তানদের কী পরিস্থিতিতে দিন কাটাতে হয় সেদিকে অনেকেরই খবর থাকে না। ফলে বাধে বিপত্তি। প্রবাসীর স্ত্রীদের ব্যাপারে আমাদের দেশে এমনিতেও একটা বদনাম রটে গেছে, তারা স্বামীর অবর্তমানে সহজে সতী থাকতে পারে না। এমনই একটি সমস্যার সমাধান দিয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া বিভাগ।
প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জেনে নিন, প্রবাসী স্বামী ফিরে আসার পর স্ত্রী কাছে না আসলে কী করা উচিত?
প্রশ্ন: আমি বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরির খাতিরে বিদেশে ছিলাম; এখন দেশে চলে এসেছি। যখন বিদেশে থাকতাম তখন প্রতিবছর একমাসের জন্য ছুটিতে বাড়ি আসতাম। কিন্তু আমার স্ত্রী অসুস্থতার বাহানা দিয়ে পৃথক বিছানায় শুত আর আমিও মেনে নিতাম। পুরো ছুটিতে একদুবারই একসঙ্গে শোবার সুযোগ হতো।
এখন আমি একেবারে দেশে চলে এসেছি। কিন্তু আমাকে পুরোপুরিভাবে ঘৃণা করতে শুরু করেছে সে। কারণ দেখাচ্ছে, ব্যাংক একাউন্টে তার যে মোবাইল নম্বরটি লিঙ্কে ছিল সেটি তাকে না বলেই সরিয়ে ফেলেছিলাম।
সে বলছে, আমার সঙ্গে সহবাস বা স্ত্রীসূলভ কোনো আচরণ আর করবে না। সে তার মাকে ডেকে এনে তার ছোট বোন ও আমার সন্তানদের সামনে বলছে, সে আমার সন্তানদের মা হয়ে থাকবে শুধু, আমার স্ত্রী হয়ে থাকবে না।
দয়া করে জানালে উপকৃত হব, এমন পরিস্থিতিতে আমার বিয়ে এখনো টিকে আছে কি?
উত্তর : স্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘৃণা বা অসন্তুষ্টি তার জন্য কঠিন গোনাহের কারণ হবে। হাদিসে এসেছে, স্বামী যখন তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে তখন সে যদি কোনো কারণ ছাড়া স্বামীর কাছে আসতে অস্বীকার করে তখন পুরো রাত ফেরেশতারা তার ওপর লানত করতে থাকে।
এমনিভাবে অন্য এক হাদিসে আছে, স্বামী যখন তার স্ত্রীকে নিজের মনোবাসনা পুরো করার জন্য ডাকবে তৎক্ষণাত স্ত্রী যেন স্বামীর কাছে চলে আসে; চাই সে রুটি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকুক না কেন!
প্রশ্নে বর্ণিত পরিস্থিতিতে স্ত্রীর নিজের আচরণের জন্য তওবা করে নেয়া উচিত। স্বামীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। হাসিখুশি জীবনযাপন করা উচিত। আপনি আনন্দচিত্তে মনমাতানো কৌশলে স্ত্রীর সঙ্গে সদাচরণ বজায় রাখুন।
তবে এ মাসআলায় স্ত্রী নিজের মুখে যেসব শব্দ ব্যবহার করেছে তার মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। আপনাদের বিয়ে ও স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক আগের মতোই অটুট আছে।
ফতোয়া প্রদান : দারুল ইফতা, দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত