বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


টঙ্গিতে তাবলিগের ওয়াজাহাতি জোড় শুক্রবার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাইনুদ্দিন তাওহিদ
টঙ্গি প্রতিনিধি

তাবলিগ জামাতে চলমান সংকট নিরসনে আগামীকাল শুক্রবার (১২ অক্টোবর) টঙ্গির কলেজ গেইট পাইলট ময়দানে তাবলিগ জামাতের ওয়াজাহাতি জোড় অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৩ টা থেকে এ জোড় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

এতে টঙ্গির ৫০টি  হালকার দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীগণ, ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবং আলেমসহ মাদরাসার ছাত্ররা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

জোড়ে রাজধানীর জামিয়া মলিবাগের প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস আল্লামা আশরাফ আলি, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস আল্লামা নুর হুসাইন কাসেমি, ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদিস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, মারকাযুদ দাওয়া আল-ইসলামিয়ার শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুল মালেক উপস্থিত থাকবেন।

তাবলিগ জামাতের চলমান সঙ্কটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কাছে প্রকৃত বিষয় ও ওলামায়ে কেরামের অবস্থান তুলে ধরতে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে বিশেষ এ ওয়াজাহাতি জোড়।

এছাড়াও টঙ্গির জোড়ে কাকরাইল মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা  যুবায়ের আহমদ,মিরপুর আকবর কমপ্লেক্সের পচিালক মুফতি দিলওয়ার হোসাইন, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা রবিউল হক, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মুকিত, মাওলানা আব্দুল মতিন, মাওলানা সাজিদুর রহমান,মুফতি আমানুল হক, মুফতি নাজমুল হাসান, মুফতি কেফায়াতুললাহ আজহারী , মুফতি মাসউদুল করীম প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত থাকবেন।

গত ২৮ জুলাই ঢাকার মুহাম্মদপুরে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে প্রথম এ জোড় অনুষ্ঠিত হয়। পর্যায় ক্রমে সারাদেশেই এ জোড় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অনুষ্ঠিত জোড়ে ৬ টি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১. জমহুর উলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন, তিনটি মৌলিক কারণে- (ক) কোরআন ও হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, (খ) তাবলিগের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে তাবলিগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয়প্রতিপন্ন করা।

(গ) পূর্ববর্তী তিন হজরতজি (হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ, ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।

২. মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ী নেযামকে উপক্ষো করে নিজেই নিজেকে আমীর দাবি করেছেন; যা শরিয়ত বিরোধী। তাই তার কোনরূপ সিদ্ধান্ত-ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত করা যাবে না।

৩. দারুল উলুম দেওবন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতাদর্শ থেকে সরে গিয়ে নতুন কোনা ফেরকা গঠনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কোনা জামাত বা ব্যক্তিকে নেযামুদ্দিনে পাঠানাে বা যাওয়া মুনাসিব হবে না।

অনুরূপভাবে নেযামুদ্দিন থেকে আগত কোনো জামাতকে বাংলাদেশের কোনো জেলায়/থানায় ইউনিয়নে কাজ করার সুযাগ দেওয়া যাবে না।

কওমি মাদরাসা ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার – বিস্তারিত জানুন

৪. হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ. ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ এর বাতানা পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ সারা দুনিয়াতে সমাদৃত ও গৃহীত হয়েছে।

তাই বাংলাদেশের তাবলিগের কাজ পূর্ববর্তী এই তিন হজরতের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। নতুন কোনো পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কাকরাইল, টঙ্গী ময়দান এবং জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে।

৫. কাকরাইল মসজিদের যে সমস্ত শুরা সদস্য আমরণ মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবের ভ্রান্ত আকিদা অনুসরণের হলফনামা করেছেন যা শরিয়ত পরিপন্থি- তারা শুরার সদস্য থাকার যােগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন।

অতএব, তাদেরকে তাবলিগের কাজে শুরা ও ফায়সাল না রাখার আহ্বান জানানা যাচ্ছে ।

৬. ২০১৮-এ টঙ্গী ইজতেমায় সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে আগামী ২০১৯-এর টঙ্গী ইজতেমার জন্য নির্ধারিত তারিখ- প্রথম পর্ব ১৮, ১৯, ২০ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫, ২৬, ২৭ জানুয়ারি এর সাথে আজকের মজমা ঐকমত্য পোষণ করছে।

আরও পড়ুন-

মিরপুর ওয়াজাহাতি জোড় থেকে ৯ ঘোষণা
আমি ওদের বলেছি আপনারা অা‌লেম‌দের সা‌থে বসুন: এমপি আসলাম
সাদ সাহেবের অনুসারীরা ব্যক্তিপূজা করছেন: আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী
এখন থেকে মিরপুর মারকাজ আলেমরা চালাবেন: ইলিয়াস মোল্লাহ
মিরপুরে চলছে ওয়াজাহাতি জোড়; বয়ান করছেন আলেমগণ

আরএম/


সম্পর্কিত খবর