রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
পৃথিবীর বরকতময় স্থান মাত্র তিনটি-তন্মধ্যে পবিত্র শহর মক্কাও একটা। যেখানে চলতে-ফিরতে, হাটতে-বসতে ও প্রত্যেক ভালো কাজে বরকত রয়েছে। আল্লাহর খলীল ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম মক্কাকে হারাম হওয়ার ঘোষণা দেন।
আল্লাহর নির্দেশে তিনি আল্লাহর ঘর কা‘বা নির্মাণ করেন এবং একে পবিত্র ঘোষণা করেন। অতপর মানুষের উদ্দেশে তিনি হজের ঘোষণা দেন এবং মক্কা নগরীর জন্য দুয়া করেন।
আবদুল্লাহ ইবন যায়েদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘নিশ্চয় ইবরাহীম মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেন এবং শহরটির জন্য দুয়া করেন।’ (বুখারী : ১৮৮৩; মুসলিম : ১৩৮৩)
আর যে ব্যক্তি দুই পবিত্র নগরীর (মক্কা-মদিনা) যেকোনো একটিতে মৃত্যুবরণ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নিশ্চিন্ত করে ওঠাবেন।
মক্কা অথবা মদিনায় মৃত্যুবরণ করা হাজীদের কাছে বরাবরই মর্যাদার বিষয় হিসেবে বিবেচিত। সব ধরনের শিরক থেকে মুক্ত নেককার কোনো বান্দা যদি পবিত্র দুই নগরীর (মক্কা ও মাদিনা) কোনো একটিতে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে তা হবে অতিরিক্ত মর্যাদার বিষয়।
তিনি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবেন। তার হাশর হবে জান্নাতি মানুষ হিসেবে। রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি মক্কা অথবা মদিনায় মৃত্যুবরণ করে, সে (জাহান্নাম থেকে) মুক্তি লাভ করে হাশরের ময়দানে উঠবে।’ (বায়হাকি, শুয়াবুল ইমান : ৩/৪৯০)।
একজন মানুষ হজ থেকে ফিরে এলে যেমন নিষ্পাপ হয়ে ফিরেন, তেমনি হজে গিয়ে মৃত্যুবরণ করলেও তা সৌভাগ্যের মৃত্যু। সৌভাগ্যের দরজাগুলো খুলে যায় হাজীর জন্য। এমনকি সেই মৃত্যু যদি কোনো দুর্ঘটনামুক্ত স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, তবুও হজের সফরের সেই মৃত্যু ফজিলতের।
হজের আজন্ম স্বপ্ন পূরণের আবেগঘন সেই মুহূর্তেই যদি কারও কাছে মৃত্যুর অবধারিত পরিণতি হজির হয়ে যায়, তাহলে তিনি হজ না করেও এর সওয়াব পেতে থাকবেন অনবরত।
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি হজের উদ্দেশে বের হলো, অতঃপর সে মারা গেল, তার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত হজের নেকি লেখা হতে থাকবে।’ (সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহিব : ১১১৪)।
আর সেই মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনার কারণে হলে তো কোনো কথাই নেই। হজের সফরে কোনো দুর্ঘটনার করণে মৃত্যু হলে সেই হাজী তালবিয়া (লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ...) পাঠরত অবস্থায় হাশরের ময়দানে উত্থিত হবে।
জনৈক মুহরিম (হজের এহরামরত) ব্যক্তিকে তার সওয়ারি ভূপাতিত করলে তার মৃত্যু হয়। তখন রাসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন, ‘তোমরা তাকে বরই পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও এবং তার দুইটি কাপড়েই তাকে কাফন পরাও। তার মাথা ও চেহারা ঢাকবে না। কেননা, সে কেয়ামত দিবসে তালবিয়া পাঠ করতে করতে উত্থিত হবে।’ (আবু দাউদ : ৩/২১৩)।
কখনও কখনও হজের সফরের মৃত্যু সরাসরি শহীদি মৃত্যুতে পরিণত হয়। ক্রেন ধস অথবা অগ্নিকা-ের মতো কোনো দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তা শহীদি মৃত্যু বলে গণ্য হবে।
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও সাত ধরনের শহীদ রয়েছে। ১. মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি, ২. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি, ৩. শয্যাশায়ী অবস্থায় নিহত ব্যক্তি, ৪. পেটের রোগে মৃত্যুবরণকারী, ৫. অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি, ৬. যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায়, ৭. সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যাওয়া নারী। (আবু দাউদ : ৩/১৫৬)।
এ বছর হজের খুতবা দিবেন নতুন শায়খ, জানুন তার পরিচয়
ব্যবসার হিসাব নিকাশ এখন হাতের মুঠোয়- ক্লিক
অারএম/