বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক দারুন্নাজাতের প্রাক্তন ছাত্র শিহাবউদ্দীনের আল আজহার থেকে এমফিল ডিগ্রি অর্জন কাজের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

এরদোগান বললেন, তুরস্ক এখন স্বাধীনতা যুদ্ধ করছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম: তুরস্কের মুদ্রা লিরার দাম ক্রমশ কমেই চলেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে দেশটি।

মার্কিন ডলারের বদলে নিজস্ব মুদ্রা লিরা’র মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান।

তিনি জনগণের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, তাদের কাছে যত ডলার ও ইউরো আছে সেসব ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে দিতে। আর নিজেদের মুদ্রার মান পুনরুদ্ধারের এই লড়াইকে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধ বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় বেবার্ট প্রদেশে এক সমাবেশে এরদোগান বলেন, চীন, রাশিয়া, ইরান ও ইউক্রেনের মতো তুরস্কের শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সাথেও তুর্কি লিরায় বাণিজ্যের চেষ্টা করা হবে। আপনাদের যাদের ম্যাট্রেসের নিচে ডলার, ইউরো বা সোনা রয়েছে, তারা ব্যাংকে গিয়ে এগুলো ভাঙিয়ে লিরা করে নিন।

এটা হবে যারা আমাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে; তাদের বিরুদ্ধে আমাদের জনগণের উত্তর। তুর্কি জনগণের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নেতিবাচক দিকগুলো থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা তুরস্কের রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে এরদোগান বলেন, ওয়াশিংটন যদি ‘একলা চলার এবং সম্মান না দেখানোর’ পথ ত্যাগ না করে তাহলে আঙ্কারাও নতুন মিত্র খুঁজে নেবে।

যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। ওদের যদি ডলার থাকে, তাহলে আমাদের আছে আমাদের জনগণ, আমাদের অধিকার ও আমাদের আছেন আল্লাহ।

তুর্কি অর্থনীতিবিদ বুরাক কানলি বলেন, ‘মুদ্রার দরপতন তুরস্কের অর্থনীতির জন্য খুবই উদ্বেগজনক। যার প্রভাব অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে এরইমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। এই মুহর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগ প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের অবনতি হলে এর প্রভাব আরো ভয়াবহ হতে পারে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, এতো দ্রুত লিরার মান কমছে, ধীরে ধীরে দেউলিয়াত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির তালিকায় ১৮ নম্বরে থাকা দেশটি। তুর্কি মুদ্রার দাম কমে যাওয়ায় প্রভাব ফেলছে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের বাজারে এমনকি ইউরোপেও।

লিরার মান শুক্রবারও ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যদিও দিনের শেষে তা কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়ে ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। গত সপ্তাহের শুরু থেকেই এই ধারা অব্যাহত আছে।

বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ দাম কমেছে টার্কিশ মুদ্রার। গত বছরের জুনে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরদোগান ক্ষমতা আরো সুসংহত করার পর থেকে অবনমন ঘটেছে ৩০ শতাংশ।

তবে এই দুঃসময়ে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ দিতে ভুলেনি যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবারই ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ক থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্কবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।

সার্বিকভাবে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের এই বাণিজ্যে দুই পণ্যে শুল্কবৃদ্ধি তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু এর ফলে বিশ্ববাণিজ্যে তুর্কি লিরার ওপর আস্থা আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, ‘আমাদের খুব শক্তিশালী ডলারের বিপরীতে টার্কিশ লিরার দাম দ্রুতই কমছে। তুরস্কের সাথে আমাদের সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাচ্ছে না।’

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছেন ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রকেই। নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা এক উপ-সম্পাদকীয়তে তিনি লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনই তুরস্কের জনগণের উদ্বেগ অনুধাবন বা সম্মান করতে পারেনি।

যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের সার্বভৌমত্বকে সম্মান দিতে হবে এবং তুর্কিদের বিপদ বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তা না হলে, আমাদের সম্পর্ক আরো জটিল হবে।

অনেক বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই ওয়াশিংটনের উচিত এমন ভুল পদক্ষেপ নেয়া থেকে বের হয়ে আসা, অন্যথা দুই দেশের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছবে যাতে আঙ্কারা বিকল্প মিত্র খুঁজতে বাধ্য না হয়। এ রকম অসম্মান চলতে থাকলে আমরা বাধ্য হব নতুন মিত্রতা খুঁজে নিতে।

তুরস্কে আটক মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রুনসনের মুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে টানাপড়েন চলছে। সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের মার্কিন সমর্থন, রুশ মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে তুরস্কের আগ্রহ এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে উসকানিদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ফেতুল্লাহ গুলেনকে ফেরত আনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সঙ্কট চলছে।

এরদোগানের একজন মুখপাত্র ইব্রাহীম কালিন ওয়াশিংটন পুরোপুরিভাবেই মিত্র হিসাবে আঙ্কারাকে হারিয়ে ফেলতে পারে হুমকি দিয়ে বলেন, কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধানের পথ ট্রাম্প প্রশাসনের কারণে ভেস্তে গেছে।

তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরিভাবেই তুরস্ককে মিত্র হিসাবে হারানোর ঝুঁকি নিচ্ছে। ‍তুরস্কের পুরো জাতি যুক্তরাষ্ট্রের এরকম নীতির বিরুদ্ধে এবং ‍তুরস্কের নিরাপত্তার পক্ষে রয়েছে। হুমকি, নিষেধাজ্ঞা এবং অপমানজনক আচরণ ‍তুরস্কের বিরুদ্ধে কোনো কাজে দিবে না।’

সূত্র: অাল-আরাবিয়া 

পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন শাখার তোপের মুখে ইমরান খান


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ