সাঈদ হোসাইন
লেখক ও প্রাবন্ধিক
শিরোনাম দেখে অনেকের চোখ ছানাবড়া হয়ে যেতে পারে। বলতে পারে, ট্রাফিক আইনের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক কী? এ প্রশ্ন স্বাভাবিক। কারণ, আমরা জাগতিক বিষয়গুলো ইসলামের আওতা বহির্ভূত মনে করি। আমাদের মাথায় এটা গেঁথে গেছে যে- ইসলামের সম্পর্ক শুধু মসজিদ-মাদরাসার সঙ্গে। এ ভ্রান্তবিশ্বাসের ফলে কেউ ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করলে গোনাহ হচ্ছে বলে মনে করে না। এ কারণেই নিতান্ত ধার্মিক ব্যক্তিরাও নির্দ্বিধায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে থাকেন।
প্রথম কথা হল, কোন ব্যক্তি যখন যানবাহন চালানোর লাইসেন্স নেয়, তখন সে সরকারের কাছে কার্যত ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়। এ অঙ্গীকারের ভিত্তিতে তাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। সুতরাং কেউ ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করলে অঙ্গীকার ভঙ্গের গোনাহে লিপ্ত হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অঙ্গীকারসমূহ পূর্ণ কর।... (সুরা মায়েদা ৫:১)
হাদীসে এসেছে যে, আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন যার মধ্যে আমানতদারিতা নেই, তার ঈমান নেই। আর যে অঙ্গীকার পালন করে না,তার মধ্যে দ্বীন নেই। (মুসনাদে আহমদ, ১৩৬৩৭)
দ্বিতীয় কথা হল, ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। এ কারণে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। এর ফলে সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায় কিংবা শারীরিক ক্ষতির সম্মুখিন হয়। এটা ‘ফাসাদ ফিল আরদ’ তথা ভূপৃষ্ঠে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামান্তর।
আল্লাহ তাআলা বলেন, আরভূপৃষ্ঠে তোমরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বেড়িও না। (সুরা বাকারা ২:৬০)
অন্য আয়াতে এসেছে, যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝাবহন করে। (সুরা আহযাব ৩৩:৫৮)
আর হত্যা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সব মানুষকেই হত্যা করে এবং যে কারও জীবন রক্ষা করে, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করে।... (সুরা মায়েদা ৫:৩২)
ইসলাম আমাদেরকে এমন উন্নত শিক্ষাই দান করেছে। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এরকম পাপ কাজ থেকে বিরত থেকে ইসলামের সোনালি নীতিমালা অনুসরণ করলে পরিবর্তন সূচিত হবে। এভাবে ব্যক্তি থেকে জাতীয় পর্যায়ে ক্রমপরিবর্তন সাধিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের সঠিত জ্ঞান দান করুন। আমিন।
আরও পড়ুন: বিয়ের পর হানিমুন: ইসলাম কী বলে?
[ব্যবসার যাবতীয় কাজ সহজ করতে এলো বিসফটি। এখনই রেজিস্ট্রেশন করুন বিসফটি।]
আরএম/