আওয়ার ইসলাম: কুমিল্লার চান্দিনায় এক ভুয়া গাইনি ডাক্তারের অপচিকিৎসায় একদিনে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।শুক্রবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্ত শেষে চান্দিনা থানা পুলিশ শিশু দুটির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
নিহত এক শিশুর পিতা ওমর ফারুক জানান, এলাকার লোকমুখে ডাক্তার কামরুন্নাহারের নাম শুনে তারা কাছে প্রায়ই নিয়ে আসতাম। বুধবার বিকেলেও তিনি (ডাক্তার কামরুন্নাহার) আমার স্ত্রীর আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে বলেন, আগামীদিন সকালে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আসতে।
তার কথামত বৃহস্পতিবার তার চেম্বারে নিয়ে আসি। সেখানে আনার পর তিনি তার স্ত্রীকে ইজেকশন ও স্যালাইন দেয়। বিকেলের দিকে তার ছেলে সন্তান হয়েছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর আবারও জানান, তার স্ত্রীর সাইড সিজারে সন্তান ডেলিভারি হওয়ায় স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং সন্তান মারা গেছে।
নিহত অপর শিশুর খালা কুলসুমা জানান, ছোট বোনের প্রসব ব্যথা শুরু হলে কামরুন্নাহার ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে আসি। দুপুর অনুমান ২টায় বোনের সন্তান প্রসব হওয়ার পর থেকে শিশুটির শরীর ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে আসছিল।
বিষয়টি তাকে (কামরুন্নাহারকে) জানালে তিনি বলেন, ‘আমি ডাক্তার না আপনারা ডাক্তার’। তিনি আমাদের হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এই ইনজেকশনটি নিয়ে আসেন, আমাদের বাচ্চার অবস্থা ভাল না’ আমরা বাজার থেকে ওই ইনজেকশন এনে দিলে তারা ওই ইনজেকশনটি শিশুটির শরীরে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু ঘটে তার।
মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে দুইটি বাচ্চার মৃত্যুর পর কামরুন্নাহার বলেন, ‘আমি একটু বাজার থেকে আসছি। আপনারা থাকেন’ এই কথা বলেই তিনি পালিয়ে যান। পরবর্তীতে কথিত ওই চিকিৎসক কামরুন্নাহারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সন্দেহে চান্দিনার দোল্লাই নোয়াবপুর বাজারের একটি কনসালটেশন সেন্টার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আটক করা ভুয়া গাইনি ডাক্তার কামরুন্নাহারের সহযোগী ইয়াসমিনকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে চান্দিনা থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান, নিহত দুইজনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
কেএল