আবদুল্লাহ তামিম: এইডস থেকে মুক্তি পেতে মোজাম্বিকের জামবেজিয়া প্রদেশের যে সমস্ত এলাকায় খতনা করার প্রচলন তেমন নেই, সেগুলোতে চলতে খতনার কার্যক্রম।
গত বছর এই কর্মসূচির আওতায় জামবেজিয়াতে ৮৪০০০ পুরুষের খতনা করা হয়েছিল। এবার এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে।
প্রদেশের গভর্নর আব্দুল রাজ্জাক, যিনি নিজে পেশায় ডাক্তার, এই খতনা কর্মসূচিকে সমর্থন করছেন। "পুরুষের খতনা এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধে সাহায্য করে, যদিও এতে রোগ সারায় না।"
কাউকেই খতনা করতে জোর করা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য কর্মীরা শুধু বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে এতে এইডস প্রতিরোধে সাহায্য হতে পারে।
খতনা ইসলামের অন্যতম বিধান। ইসলামে এ বিধানের তাৎপর্য অনেক অনেক বেশি। সব মুসলিমদেরই খতনা করা অপরিহার্য। এ বিধানের সুফল এখন সারা বিশ্বের মুসলিমই না শুধু , উপলব্ধি করছে খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্মালম্বিরা।
দুই ধাপে খতনা প্রকল্পে খরচ হবে ৭২৮,০০০ মার্কিন ডলার। এইডস প্রতিরোধে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি চ্যারিটি থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ক্যান্সার রিসার্চ প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, প্রতি দশটি ক্যান্সারের ঘটনার ক্ষেত্রে অন্তত চারটি ঘটনা লাইফস্টাইল বা জীবন যাপনের পদ্ধতি দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এজন্য ক্যান্সারের কারণ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানাটা জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনভিার্সিটি কলেজ লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অফ লিডস এর গবেষকরা, এই গবেষণার জন্য একটি জরিপ চালিয়েছিলেন।
গবেষকরা বলছেন, জরিপে অংশ নেয়াদের মধ্যে অন্তত ৪০ ভাগ মানুষ ভুলভাবে 'স্ট্রেস' বা মানসিক চাপি এবং খাদ্যাভ্যাসকে ক্যান্সারের কারণ বলে মনে করে।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অন্তত তিন ভাগের এক ভাগ বিশ্বাস করে যে, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফ্রিকোয়েন্সি (৩৫%) এবং জেনেটিকেলি মডিফায়েড (জিএম) খাবার (৩৪%) খেলে ক্যান্সার হবার আশঙ্কা রয়েছে।
তাছাড়া, যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক তথ্য-প্রমাণ না থাকার পরেও, অন্তত ১৯ শতাংশ মনে করে যে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাবার গরম করে খেলে এবং প্লাস্টিকের বোতল থেকে পানি খেলে ক্যান্সার হতে পারে।
জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন এর মধ্যে অবশ্য সবচে বেশি সংখ্যক মানুষ শতকরা ৮৮% ধূমপান এবং ৮০ ভাগ মানুষ পরোক্ষ ধূমপান আর ৬০ ভাগ মানুষ 'সানবার্ন' বা রোদে পোড়াকে ক্যান্সারের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন।
গবেষকরা বলছেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে যাদের মনে ভুল ধারণা ছিল তারা অনেক ঝুঁকিপূর্ণভাবে জীবন-যাপন করছিলেন।
বরং গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে যারা অনেক সঠিক তথ্য জানে তারা বেশি সচেতন এবং তারা ধূমপান থেকে দূরে থাকে।
তাছাড়া সচেতন ব্যক্তিরা বেশি করে সবজি আর ফল-ফলাদিও খায় বলেও উল্লেখ করেছেন গবেষকেরা।
ইউনিভার্সিটি অফ লিডস এর ড. স্যামুয়েল স্মিথ বলেন, "এটি খুবই দুশ্চিন্তার বিষয় যে, বৈজ্ঞানিক কোনো প্রমাণাদি না থাকার পরেও বহু মানুষ বিভিন্ন বিষয়কে ক্যান্সারের কারণ হিসেবে মনে করে।"
মি. স্মিথ আরো বলেন যে, এই শতকের শুরুর দিকে অসত্য ও অপ্রমানিত বিষয়গুলোকে যে পরিমান মানুষ ক্যান্সারের কারণ হিসেবে মনে করতো, এখন তার থেকেও বেশি মানুষ সেটি মনে করছে।
আরো পড়ুন- শ্রমজীবি সাহাবিদের গল্প