আওয়ার ইসলাম: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে সুখী সম্মৃদ্ধশালী উন্নত দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি। সংগঠনটি দেশব্যাপী ব্যাপক ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যক্তা মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন এ ঘোষণা দেন। যিনি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বিডিজি মাগুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও ইংরেজী দৈনিক বাংলাদেশ নিউজ এর সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দিন পরিবর্তনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাহার খান ও বাংলাদেশ নিউজ এর নির্বাহী সম্পাদক সোহেল মঞ্জুর।
মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, নতুন এই সংগঠন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রেরণা, ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও স্বপ্নের সুখী সম্মৃদ্ধ এবং শোষণমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার সামনে রেখে সারা দেশজুড়ে কাজকর্ম পরিচালনা করবে।
দেশব্যাপী আমাদের সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনায় আমরা অন্তত চারটি মৌলিক লক্ষ্যের দিকে অবিচল ও দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব। সেগুলো হলো, প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব; মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রেরণা; ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ এবং স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা।
তিনি বলেন, ৭০ দশকের তলাহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ এখন বিশে^র বিস্ময়। আমরা বিশে^ নজির স্থাপন করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সকল সূচকে ক্রমাগত মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছি। এখন সামনে শুধুই এগিয়ে চলার পথ। আমরা প্রমান করেছি আমরা পারি এবং কারো দয়ার মুখাপেক্ষী নই।
সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে সুদৃশ্য ৪ রঙ্গা কভারে ১ কোটি কপি ছেপেছি। এগুলোর সাথে সাথে প্রতিটি ঘরে বিনামুল্যে জাতীয় পতাকাও পৌঁছে দেব।
একই সাথে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যাকে ধরে ৩০ লাখ বটবৃক্ষ রোপন করবো। আর আমাদের দেশের সব উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার তথ্য তুলে ধরতে আমরা প্রকাশ করবো দৈনিক দিন পরিবর্তন। এর মাধ্যমেই আমরা এগিয়ে যাবো।
মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন দেশকে মধ্যম আয়ে উত্তরণের গৌরবময় অবস্থানে নিয়ে আসার জন্য যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সবার প্রতি বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটির পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুই প্রথম আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধিকার আন্দোলন শুরুর মাধ্যমে শোষণ-বঞ্চনার পরিসমাপ্তি এবং জাতীয় সম্পদের সুরক্ষা, প্রবৃদ্ধি ও সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। সেই স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরেই শেষ পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা সেই মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২১ ও উন্নত বাংলাদেশ ২০৪১ ঘোষণা করেছেন। তার এই মহান জাতীয় লক্ষ্য অর্জনের অঙ্গীকার নিয়েই আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি বাংলাদেশ ২১-৪১ সোসাইটি।
এই সংগঠনের ব্যানারে আমরা সব দেশপ্রেমিক, প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ জনগণকে একটি সুনির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে এনে একাত্তরের মতো ইস্পাতদৃঢ় ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত করতে চাই।
সংহঠনের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ভূইয়া সংগঠনের চেয়ারম্যান সম্পর্কে বলেন, দেশে অনেক ব্যবসায়ী থাকলেও তাদের অনেকেই চিত্ত ও বিত্তে ধনী নয়। তাই তারা সমাজের জন্য কিছু করতে পারেন না। আমাদের চেয়ারম্যান চিত্ত ও বিত্তে ধনী, তাই তিনি সমাজের জন্য কিছু করতে চান। আর এজন্যই তিনি এ উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, কোম্পানী আইনের আওতায় ছোট একটি কমিটি করে আমরা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। পরবর্তীতে সবাইকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি হবে। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং পেশাজীবীরা থাকবেন। আর উপদেষ্টা কমিটিতে থাকবেন বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা।
আর থাকবে পৃষ্ঠপোষক কমিটি। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হবার আবেদন করবো। ধীরে ধীরে আমরা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে যাবো। এর মাধ্যমে আমরা দেশ গঠনে একটি নতুন সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এক প্রশ্নের জবাবে আজিজ ভূইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমরা বাংলাদেশের সব পরিবারে পৌছাবো। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় লেভেলে এটি নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। আর গ্রামে গঞ্জে জার্মান, ব্রাজিলের পতাকা উড়ে। আমরা ঘরে ঘরে বাংলাদেশী পতাকা উড়ানোর ব্যবস্থা করবো। আর ৩০ লাখ শহীদের সম্মানে মুক্তিবৃক্ষ রোপন করবো।
সংগঠনের কার্যক্রমের মেয়াদকাল নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাজে ২৫ লাখ স্বেচ্ছাসেবী লাগবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহায়তা করলে আমরা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাব। ৭ মার্চের ভাষণ, পতাকা পৌছানো, গাছ লাগানো খুবই সময়সাপেক্ষ।
প্রতিটি মুক্তিবৃক্ষের সাথে লোহার দন্ডে থাকবে সনাক্ত নম্বর। অঅমরা বঙ্গভবনে মুক্তিবৃক্ষ-১ এবং গণভবনে মুক্তিবৃক্ষ-২ রোপন করে কার্যক্রম শুরু করতে চাই। কোন সময় দিয়ে আমাদের বাধা যাবে না। যতদিন লাগে আমরা তা করবো এবং ভবিষ্যতে আরো নতুন কার্যক্রম হাতে নেবো।