আওয়ার ইসলাম, ডেস্ক: মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ঢাকা-জেদ্দা ও ঢাকা-মদিনা রুটে ২০১৮ সালের হজ্বযাত্রীদের জন্য উড়োজাহাজ ভাড়া নির্ধারণ করে তৈরি করা প্রস্তাব ।
প্রস্তাবে উড়োজাহাজ ভাড়া ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৭৫ মার্কিন ডলার। প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে এ বছর হজ্বের খরচ বাড়বে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত উড়োজাহাজ ভাড়ার বিষয়টি তোলা হবে। এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘সোমবারের মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। সেখানে এটি চূড়ান্ত হবে’।
ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব কেন দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবার তেলের দাম বেড়েছে। সৌদি আরব ভ্যাট বাড়িয়েছে’। এজন্য এই প্রস্তাব। তবে খুব বেশি বাড়বে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের হজযাত্রীদের জন্য ঢাকা-জেদ্দা ও মদিনা-ঢাকা রুটে এক হাজার ৫৫০ ইউএস ডলার উড়োজাহাজ ভাড়া নির্ধারণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এই রুটে যুক্তিসঙ্গত উড়োজাহাজ ভাড়া নির্ধারণে গত ৪ ফেব্রুয়ারি একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী উড়োজাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী উড়োজাহাজ ভাড়া ও ট্রাভেল এজেন্সি কমিশন ২৫ ডলারসহ মোট ১৫ হাজার ৫৭৫ ডলার নির্ধারণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আব্দুর রশিদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি উড়োজাহাজ ভাড়া এক হাজার ৫৫০ ডলার, সৌদি বিমানবন্দর বিল্ডিং চার্জ ১৭৪ সৌদি রিয়াল, হজ টার্মিনাল সার্ভিস চার্জ ৩০ রিয়াল, বাংলাদেশ অ্যাম্বারকেশন ফি ৫০০ টাকা, অ্যাম্বারকেশন ফি-এর ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট হিসাবে ৭৫ টাকা, বাংলাদেশ এক্সাইজ ডিউটি দুই হাজার টাকা, সৌদি সরকারের সিকিউরিটি চার্জ চার মার্কিন ডলার ও ট্রাভেল এজেন্ট কমিশন ২৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে সুপারিশ করে।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিমান ভাড়া ডলারে নির্ধারণ করায় হজ মৌসুমে টিকিট ইস্যুর সময় মার্কিন ডলার বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রকৃত ভাড়া ও ট্যাক্স নির্ধারণ করা হবে।
এছাড়া এজেন্ট কমিশন অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) বাবদ পূর্ণ ভাড়ার ওপর দশমিক ৩০ শতাংশ হারে অগ্রিম কর আদায় করা হবে।
২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে ১৬ হাজার ৭৩ ক্রমিক পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। অন্য দিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে তিন লাখ ৫২ হাজার ২৯২ ক্রমিক পর্যন্ত নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় আগামী ১ মার্চ থেকে ৫ মার্চ উপযুক্ত এজেন্সি নির্ধারণ করে সৌদি আরবে তথ্য পাঠাবে। আর ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
এয়ারলাইন্স ১ মে থেকে হজযাত্রীদের টিকিট বুকিং ও মন্ত্রণালয়কে ইলেকট্রনিক তথ্য দেবে। হজযাত্রী পাঠানো হবে ১২ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট।
জানা গেছে, এই বছরের হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত হজ প্যাকেজ-১-এ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৯৬ হাজার টাকা, যা গত বছর ছিল তিন লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা।
আর প্যাকেজ-২-এ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ২৯ হাজার ২৪০ টাকা, যা গত বছর ছিল তিন লাখ ১৯ হাজার ৩৩৫ টাকা। ফলে গত বছরের তুলনায় জনপ্রতি খরচ বাড়ছে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, প্রতি বছরের মতো এবারও আলাদাভাবে কোরবানির জন্য খরচ করতে হবে সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
এছাড়া হজযাত্রীদের ট্রলিব্যাগ কেনাকাটায় অনিয়ম ঠেকাতে এবারের প্যাকেজে এই খাতে কোনও ব্যয় ধরা হয়নি।
সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট আয়তন, পরিমাপ ও রঙের ট্রলিব্যাগ সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সি যাত্রীদের সরবরাহ করবে। খবর বাংলা ট্রিবিউন।
এসএস/