মাওলানা শিব্বির আহমদ আবির
ওয়াজ মাহফিল ইসলামি শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সম্ভাবনাময় মাধ্যমটি যেন আমাদের অবহেলা, অব্যবস্থাপনা এবং খামখেয়ালিতে নষ্ট না হয়ে সে দিকে খেয়াল রাখা সংশ্লিষ্ট সবার জন্য জরুরি।
এ ক্ষেত্রে বক্তা ও আয়োজক উভয় পক্ষের কিছু দায় রয়েছে। যা জাতীয় স্বার্থেই রক্ষা করা উচিত বলে ধর্মপ্রাণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা।
আয়োজকদের যেসব বিষয় লক্ষ রাখা দরকার
১। একদিন হোক আর পাঁচদিন হোক প্রতিদিনের জন্য অল্প সংখ্যক বক্তা রাখা ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৫জন। এতে করে একজন বক্তা একটি বিষয় শ্রোতদের কাছে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন।
২। মাহফিল রাত ১০টার মধ্যেই শেষ করা যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে ১০টার পরে সভাস্থল ব্যতীত অন্য মাইকগুলো বন্ধ করে দেওয়া এবং অবশ্যই ১১টার মধ্যে মাহফিল সমাপ্ত করা।
কারণ ওয়াজ শুনতে গিয়ে অন্যদের ঘুমের বেঘাত ও ফজরের নামাজ চলে না যায় এবং এই ভাল কাজটি যেন মানুষের কষ্টের কারণ না হয়।
৩। বেশি দূরের বক্তা দাওয়াত না দেওয়া। দাওয়াত দিলে যথাযত সম্মান করা। অনেক সময় এমন হয়, বক্তার যাতায়াত খরচের টাকাই হয় না। এতে করে পরের বছর তিনি বলতে বাধ্য হন, ভাই আমাকে এত টাকা দিতে হবে।
তখন আবার আপনারাই বলবেন চুক্তিবাদী বক্তা। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খেয়াল রাখা।
৪। ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে গণহারে চাঁদা তোলা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা।
বক্তাদের জন্য কিছু লক্ষণীয় বিষয়
১। সর্বোপরি নিয়তের ইখলাস বা বিশুদ্ধতা থাকা।
২। একদিনে ১ টির অধিক মাহফিল না রাখা। একান্ত প্রয়োজন হলে দুটি রাখা যায়।
৩। বয়ান কুরআন হাদিসের আলোকে করা। যথাসম্ভব ভিত্তিহীন কিচ্ছা কাহিনী পরিহার করা।
৪। বয়ানে নির্দিষ্ট জাতি-গোষ্ঠী অথবা সম্প্রদায়কে হাসি-ঠাট্টা কিংবা তীর্যক মন্তব্য না করা এবং সর্বদা শব্দ চয়নে শালীনতা বজায় রাখা।
৫। ন্যায্য ব্যতীত অতিরিক্ত হাদিয়া আদায়ে চাপ প্রয়োগ না করা।
৬। সর্বোপরি মানুষের হেদায়াত কামনা করা।
আল্লাহ তায়ালা দীনের জন্য আমাদের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে জান্নাতের বিনিময়ে কবুল করুন। আমিন।
লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলাম ছাত্র মজলিস হবিগঞ্জ জেলা
মাহফিলে গিয়ে মহিলাদের জন্য ওয়াজ শোনা জায়েজ আছে কি?