আওয়ার ইসলাম
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য মুসলিম দেশগুলোর পর্যটন মন্ত্রীদের সম্মেলনে ‘ইসলামিক ট্যুরিজম সিটি’ হিসেবে মসজিদের শহর ঢাকার নাম ঘোষণায় আসবে বলে আশা করছে সরকার। অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি)-ভুক্ত দেশগুলোর পর্যটন মন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ইসলামিক কনফারেন্স অব ট্যুরিজম মিনিস্টার্স বা আইসিটিএম’ এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আশার কথা জানানো হয়।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সোনারগাঁও হোটেলে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে এখন পর্যন্ত ওআইসিভুক্ত ২৫টি দেশ অংশ নেবে বলে নিশ্চিত করেছে। তবে বিদেশি অতিথি থাকবেন ৮৫ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান মন্ত্রী।
সম্মেলনে ঢাকাসহ মুসলিম কৃষ্টি ছড়িয়ে থাকা অন্য শহরের নিদর্শনগুলোর গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমে ইসলামী কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে পর্যটকদের আকর্ষণ সৃষ্টি হবে।
ইসলামী বিভিন্ন দেশের পর্যটনকে হাতিয়ার করে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের প্রসারের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ নতুন কর্মকৌশল গ্রহণে দিক নির্দেশনা পাওয়া যাবে বলেও আশা করে মন্ত্রী বলেন, সর্বোপরি রিলিজিয়াস ও হালাল ট্যুরিজমকে প্রমোট করতে এ সম্মেলন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের (বিটিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. নাসির উদ্দিন বলেন, সম্মেলনে আমাদের উপস্থাপনায় হালাল ট্যুরিজমের সুযোগগুলো তুলে ধরা হবে। সম্মেলন থেকে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে সর্বোচ্চ সুফল আদায়ের চেষ্টা করা হবে বলেও জানান বিটিবি’র প্রধান নির্বাহী।
কোন শহরকে ইসলামিক ট্যুরিজম হিসেবে ঘোষণার আশা করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা মসজিদের শহর, আমরা ঢাকাকে টার্গেট করে…, আমি এখন পর্যন্ত ৯৮ শতাংশ বলতে পারি আমরা ঘোষণাটা পাবো। ইসলামিক ট্যুরিজম সিটি হিসেবে ঢাকার ঘোষণাটা আমরা আশা করছি পাবো।
মন্ত্রী বলেন, পর্যটন খাতে সদস্য দেশগুলোতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে ঢাকায় ওআইসির একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা এ সম্মেলনে আসবে বলে আমি আশাবাদী।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক বলেন, ইসলামিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ওআইসি দেশগুলোর পর্যটন বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরি, ভিসা সহজীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবে।
প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের বিষয়ে বিটিবির প্রধান নির্বাহী বলেন, গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ওআইসি দেশের সদস্যগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এভাবে ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আমাদের হসপিটালিটি, দক্ষতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা প্রস্তাব করছি।
সম্মেলনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পর্যটন বিষয়ে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিশ্বে ইসলামিক কালচারাল হেরিটেজভিত্তিক পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য পর্যটন মন্ত্রী, উচ্চ পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি পর্যটন কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন।
৫ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের প্রাথমিক কার্যক্রমসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সভা এবং ৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনসহ পর্যটন মন্ত্রীদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে কনফারেন্সটি শেষ হবে এবং ৭ ফেব্রুয়ারি অতিথিদের জন্য একটি টেকনিক্যাল ট্যুর আয়োজন করা হবে। সম্মেলনে আইসিটিএম’র পরবর্তী ১১তম অধিবেশনের ভেন্যু নির্ধারণ হওয়ার কথা রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি দেশগুলোর তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন ভাবনা ও পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রতি দুই বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবারের সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে।