আওয়ার ইসলাম: আগামী নির্বাচনে সারা দেশে তিনশ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী ঐক্যজোট। একই সাথে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীও ঘোষণা করেছে দলটি।
আজ রবিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী লিখিত ঘোষণাপত্রে পাঠ করে বলেন, আজকের এই জাতীয় মহাসমাবেশ ঘোষণা করছে যে, নিজস্ব স্বান্ত্রতা বজায় রেখে ইসলামী ঐক্যজোট আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মিনার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে।
তাছাড়া ইসলামী ঐক্যজোট আগামী নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট, মহাজোট বা অন্য কোন জোটের সাথে সম্পৃক্ত হবে না। কারণ ইসলামী ঐক্যজোট স্বতন্ত্রভাবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া হিসাবে জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে আসছে।
ইসলামী ঐক্যজোট শুধু একটি রাজনৈতিক জোটের নাম নয়; বরং ইসলামী জাগরণের উদ্যোমী এক দুর্জয় ও সাহসী কাফেলার নাম। ইসলামী রাজনীতির ক্ষেত্রে দিশারাী হিসাবেই এর আবির্ভাব। প্রয়োজনে ইসলামী ঐক্যজোট নিজস্ব বলয়ে নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত হক্বপন্থী অন্যান্য ইসলামী সমমনা দলসমূহ নিয়ে জোট গড়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ইহুদীরা অভিশপ্ত জাতি। তাদের দেশ নেই, রাষ্ট্র নেই। তাই তাদের কোন রাজধানী হতে পারে না।
তিনি বলেন ওআইসি জেরুজালেমকে মুসলমানদের রাজধানী ঘোষণা করেছে। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এই দাবী রক্ষার জন্য প্রয়োজনে বিশ্বে ২০০ কোটি মুসলমান লড়াই করবে।
তিনি বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট আলোকিত দিশারীর ভূমিকা পালন করছে। দলটি দেশে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এদেশের আমূল পরিবর্তন আনতে চায়। এদেশের ওলামায়ে কেরামরাও বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়। সে লক্ষে ইসলামী ঐক্যজোট ২০ দলীয় জোট থেকে বের হয়ে এসেছে।
মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে নিজস্ব প্রতীক মিনার মার্কায় নির্বাচন করবে। কোন জোট কিংবা মহাজোটের লেজুড়বৃত্তি করবে না।
তিনি বলেন, কওমী সনদের মান উলামায়ে কেরামের অধিকার। এই মান নিয়ে অতীতের মত প্রতারণা করলে পরিণাম ভাল হবে না। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই এ সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে।
মুফতী ফয়জুল্লাহ নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান করায় সরকারকে সাধুবাদ জানান। আগামী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে ইসলামী এককভাবে নির্বাচন করবে এমন অভিব্যক্তি জানিয়ে তিনি আসন্ন উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচনে দলের সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী ইয়াকুবকে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।
ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, আমরা জোট করেছিলাম ইসলামের স্বার্থে, তা ত্যাগও করেছি ইসলামের স্বার্থে। আমাদের এই সিদ্ধান্ত ছিল সময়োপযোগী ও সঠিক। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানাই এই জন্য যে, তিনি ইসলামের পক্ষে কিছু ভাল কাজ করেছেন। আশা করি, এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
তিনি বলেন, মুফতী আমিনী রহ. দীর্ঘ একুশ মাস গৃহবন্দী ছিলেন ইসলামের জন্য। কোন মন্ত্রী এমপি হওয়ার জন্য নয়। তিনি দেশের অর্থ পাচারকারীদের বিচার দাবী করে বলেন, কোন দল বুঝি না, যারাই দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চায়। অবিলম্বে সেই অর্থ ফেরত এনে দোষীদের বিচার করতে হবে।
জোটের ভাইস চেয়ারম্যান মওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর) বলেন, ইজ্জতের মালিক আল্লাহ। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) পাশে কিছু নাস্তিক-মুরতাদ এমপি আছে। তাদের কথায় কান না দিয়ে আপনি আল্লামা আহমদ শফীর দাবী মেনে নিয়েছেন। যদি ইজ্জত ধরে রাখতে চান, আগামী নির্বাচনের পূর্বেই দাওরায়ে হাদীসের সনদকে কার্যকর করে এই দাবী বাস্তবায়ন করুন। অতীতে যারা কথা দিয়েও রাখতে পারেনি আজ তারা আফসোস করছে। আপনাকে যেন তাদের মত আফসোস করতে না হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবু তাহের জেহাদী, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিমউদ্দিন, মাওলানা অধ্যাপক এহতেশাম সারওয়ার, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী তৈয়্যব হোসাইন, মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা শেখ লোকমান হোসাইন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মাওলানা আব্দুল হাই ফারুকী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, জনাব ওবায়দুল হক, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ গাজী, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা আনসারুল হক ইমরান, ছাত্র খেলাফতের সভাপতি মুহা. খোরশেদ আলম, ইসলামী ছাত্র সমাজের সভাপতি মু. নুরুজ্জামান মাওলানা আব্দুল হাই আব্বাসী-কুমিল্লা, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা আবু সায়েম- নেত্রকোণা, মাওলানা শহিদুল ইসলাম ইনসাফী-যশোর, মাওলানা বুরহানুদ্দীন কাসেমী, মাওলানা মেহেদী হাসান-বি-বাড়ীয়া, মাওলানা রহমতুল্লাহ-ডেমরা, ঢাকা মাওলানা আবু তাহের খান, মাওলানা খাইরুল ইসলাম, মাওলানা হাকীম এনামুল হক-ময়মনসিংহ, মাওলানা মুখলিসুর রহমান-গাজীপুর, মাওলানা আসলাম রাহমানী, মাওলানা আবু ইউসুফ, ডা. হাবিবুর রহমান-সিলেট, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা হারিছুল হক-নরসিংদী, মাওলানা আনম আহমদউল্লাহ মাওলানা ওসমান কাসেমী-চট্টগ্রাম, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক, মাওলানা নজরুল ইসলাম-বগুড়া, মাওলানা আব্দুর রহীম ফারুকী-কক্সবাজার, মুফতী জাফর আহমদ-টাঙ্গাঈল, মাওলানা ইসমাঈল (চাঁদপুর), মাওলানা আজিজুল হক-মৌলভীবাজার, মাওলানা তৈয়বুর রহমান-সুনামগঞ্জ, মাওলানা মাহবুবুল্লাহ-গোপালগঞ্জ, মাওলানা ফরহাদ আলম-দিনাজপুরসহ ষাটোর্দ্ধ জেলার প্রতিনিধি।