শাহনূর শাহীন: নতুন বছরের শুরুতে মন্ত্রীসভায় যোগ হয় তিন নতুন মন্ত্রী। রাজনৈতিক ময়দানে যারা একবারেই অপরিচিত। একজন আছেন রাজনীতির বাইরের লোকও।
নতুন মন্ত্রী নিয়োগের পাশাপাশি পুরনো কয়েকজন মন্ত্রীর দফতরও অদল-বদল করা হয়েছে। রদবদল হওয়া পুরনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বর্তমান সরকারের প্রথম থেকেই পরিবেশ ও বনমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাকে এখন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলতে পারবেন কেন, কীসের জন্য তিনি পরিবর্তন করেছেন।
এ বিষয়ে আমার কোনো ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া নেই। বদলের কারণ আমি বলতে পারবো না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) হর্তাকর্তা-বিধাতা, উনি সব নির্ধারণ করেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন রাশেদ খান মেনন।
রদবদলের পালায় পড়ে তিনি এখন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। দফতর বদলের প্রতিক্রিয়ায় তিনি কিছুটা রসিকতা করে বলেন, ‘আমার জন্য সুখকর এই কারণে বলতে পারেন, আমি আকাশ থেকে একটু মাটিতে নামলাম।
তবে তিনি দফতর বদলের পর গতকাল বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বিকালে সচিবালয়ে বিমান মন্ত্রণালয়ে এসে সাংবাদিকের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা অনেক হিসাব করেই মন্ত্রিসভায় রদবদল এনেছেন।
বছরের প্রথম ভাগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার যে সম্প্রসারণ ও পরিবর্তন সাধন করলেন, আমার মনে হয় স্বাভাবিকভাবে প্রশাসনে গতিশীলতা আনার জন্যই করলেন। এটিই হচ্ছে শেষ বছর আমাদের সরকারের।
সংশ্লিষ্ট আগের নিউজ... নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দফতর বন্টন সম্পন্ন
সরকারের শুরু থেকেই আনিসুল ইসলাম মাহমুদ পানিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আসছেন।
দফতর বদল হওয়ার পর তিনি এখন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। দফতর বদলের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘সরকারে ছিলাম, সরকারে আছি। প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আগেও পালন করেছি, আগামীতেও করবো’।
দফতর বদলের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলবো না। সরকারে ছিলাম, সরকারে আছি।’
দফতর বদলে কিছুটা অভিমানের সুরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কাজ শেষ করে এনেছি। স্যাটেলাইট বিষয়ে মানুষের কোনো ধারণা ছিল না, থাকলেও তা ছিলো ভ্রান্ত
আমি সেই ধারণা সৃষ্টি করেছি এবং ভ্রান্ত ধারণা পাল্টে দিয়েছি। এ রকম পরিস্থিতিতে আমাকে সরিয়ে দেওয়াটা মানুষ হিসেবে একটু লাগে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সামনের পথ কী হবে, আমি জানি না। এ নিয়ে আমি কিছু ভাবিনি, পরিকল্পনাও করিনি।
মন্ত্রণালয় পরিবর্তনটাকে অপমান হিসেবে দেখছেন সাবেক টেলিযোগাযোগম প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের পেছনে কোনো প্রভাবশালী মন্ত্রীর হাত রয়েছে এমনটা ইঙ্গিতই পাওয়া যায় তারানা হালিমের বক্তব্যে।
তারানা হালিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটসহ আমার হাতে সম্পন্ন করা জিনিসগুলো যখন প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ উদ্বোধন করবেন, তা যখন আমি দেখব, আমার লাগাটা কি স্বাভাবিক নয়?’
তিনি বলেন, আমি তো ফেরেশতা নই, অন্য কিছুও নই; মানুষ। রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ’
সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারানা বলেন, ‘তার পরও আমি কৃতজ্ঞ আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনি আমাকে দুবার এমপি বানিয়েছেন, প্রতিমন্ত্রী বানিয়েছেন।
তথ্যসুত্র: বাংলাট্রিবিউন, বিডি নিউজ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন।
এসএস/