ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৃহস্পতিবার বৈঠক হবে নির্বাচন কমিশনে। এতে মেয়র পদে উপনির্বাচনের পাশাপাশি ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে অন্তর্ভুক্ত নতুন ওয়ার্ডগুলোতে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের সভার আলোচ্যসূচিতে এই দুটি বিষয় অন্তর্ভুক্তির বিষয় নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতেও পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে এই দুইটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের যুগ-সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান আরজু বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের শূন্য পদে নির্বাচন বিষয় আলোচনা হবে। নির্বাচন কমিশনে সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কে এম নূরুল হুদা এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবে। সভাশেষে তফসিল ঘোষণা হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।’
২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়েছিল। আড়াই বছরের মাথায় ৩০ নভেম্বর মারা যান উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হক। এরপর ১ ডিসেম্বর থেকে তার পর শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী মেয়র বা কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের আগে যদি কোনো পদ শূন্য হয়, তবে ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচন হবে। এই হিসাবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেখানে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।
তবে এই নির্বাচন নিয়ে আইনি প্রশ্ন উঠে আনিসুল হক মারা যাওয়ার পর পর। ২০১৫ সালের এপ্রিলের ভোটের পর দুটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে ১৮টি করে নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে। সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী কাউন্সিলরদের মেয়াদ পাঁচ বছর। কিন্তু ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র নির্বাচিত হবেন আড়াই বছরের জন্য। আবার কাউন্সিলররা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হলে আড়াই বছর পর আবার সিটি নির্বাচনে নতুন কাউন্সিলরদের মেয়াদের কী হবে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে।
তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়, ভোট নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা নেই। আর জানুয়ারির প্রথম ভাগেই তফসিল ঘোষণার বিষয়েও জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন।
এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকেই ভোটে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশন কর্মকর্তারা।
এরই মধ্যে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে সংকেত পেয়ে ভোটের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়েছেন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। তিনি গত শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকও করে এসেছেন। বৈঠক শেষে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী তাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিও ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আড়াই বছর আগের ভোটে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালই আবার বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা আবদুল আউয়াল মিণ্টু। তবে এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা হয়নি।
২০১৫ সালে দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হলেও এবার ঢাকায় ভোট হবে রাজনৈতিক দলগুলার প্রতীকে। ফলে জাতীয় নির্বাচনের আগে নৌকা ও ধানের শীষের জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় আছে গোটা দেশ।
সূত্র : ঢাকা টাইমস