আওয়ার ইসলাম, ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারত থেকে মুসলিম নারীরা মাহরাম পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই হজে যেতে পারবেন। সরকার এ সংক্রান্ত এতদিনের ‘বৈষম্যমূলক নীতি’ পরিবর্তন করে দিয়েছে।
তিনি আজ (রোববার) রেডিওতে ‘মন কী বাত’ (মনের কথা) অনুষ্ঠানে ভাষণ দেয়ার সময় ওই মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব নারীরা মাহরাম ছাড়াই হজে যেতে চান তাদের লটারি পদ্ধতির বাইরে রেখে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণা প্রসঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম রেডিও তেহরানকে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একে ‘বোকা বানানোর চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় বিষয়। হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে কী বিধি বিধান আছে তা মুসলিম নারী-পুরুষ সকলেই জানে। নারীদের ক্ষেত্রে মাহরাম বা স্বামী ছাড়া দূরদূরান্তে সফরে যাওয়ার অনুমতি নেই। সেখানে হজের মতো একটি পরিপূর্ণ বিধান মানতে মুসলিমরা ধর্মীয় বিধিবহির্ভূত কাজ করবে তা সম্ভব নয়।
এগুলো নিয়ে মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। প্রত্যেক মুসলিমই জানে যে তাদের নিয়ম নীতি কী আছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার পাওয়ার জন্যই আমাদের প্রধানমন্ত্রী বোধহয় এ রকম কাজ করছেন, তাছাড়া অন্য কিছু নয়।’
মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘সৌদি সরকার হজের ক্ষেত্রে নারীদের যে ভিসা দিয়ে থাকে তারাও বিধান মেনেই ভিসা দেয়। কোনো মাহরাম ছাড়া কোনো নারীকে তারা ভিসা দেবে না। এক্ষেত্রে ভারত সরকারের নিয়ম নীতি যতই শিথিল হোক, বা উদার হোক তাতে কিছু যায় আসে না।
সুতরাং, এগুলো মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। মুসলিমরা ধর্মীয় বিধান সম্পর্কে সচেতন, তারা সেটা মেনেই হজ্বের মতো পবিত্র সফরে যাবেন ও হজ পালন করবেন।’
এ নিয়ে গার্লস ইসলামিক অর্গানাইজেশনের (জিআইও) পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি সফিউন নিসা রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘শরীয়ার যে বিধান রয়েছে, তা কুরআনভিত্তিক ও স্রষ্টাপ্রদত্ত ঐশী বিধান। এতে কোনো পরিবর্তনের অধিকার কোনো মানুষের নেই।
মাহরাম, গায়ের মাহরাম সংক্রান্ত যে বিধান রয়েছে তা কুরআন থেকে এসেছে। আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ প্রদত্ত নিয়মের মধ্যেই আমাদের জন্য কল্যাণ ও নিরাপত্তা বর্তমান রয়েছে। আমাদের কল্যাণের ব্যাপারে আমরা যতটা বুঝি, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি জানেন।
মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর না করা ইসলামের পারিবারিক যে নৈতিক ভিত্তি রয়েছে, তার মধ্যে পড়ে। এখানে বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে যদি সরকার ভেবে থাকে যে এতে নারীদের কল্যাণ হবে বা সুবিধা হবে তা ঠিক নয়।
আল্লাহ মানুষের কল্যাণ সম্পর্কে অবগত। শরীয়ার কোনো নিয়ম পরিবর্তনের অধিকার আল্লাহ কোনো মানুষকে দেননি। এর অন্যথা হলে মুসলিম নারীরা তা মেনে নেবে না। সুতরাং মোদিকে এ নিয়ে না ভাবলেও চলবে।’
মুসলিম নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ব্যাপারে সরকারের চেয়ে আল্লাহ্ অনেক বেশি অবগত বলেও রাজ্য জিআইও সভাপতি সফিউন নিসা বলেন। সুত্র: পার্সটুডে।
এসএস/