আওয়ার ইসলাম : খ্রিস্টান-ইসলামিক কমিটির সদস্য ফাদার ম্যানুয়েল মিউজিলাম বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী করার সিদ্ধান্তে ধর্মযুদ্ধ বাধবে এবং তা মক্কা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, আল-আকসা মসজিদ ইসরায়েলের হাতে পড়লে এর পতন হবে। কারণ যত ধরনের খনন কাজ আছে, ইসরায়েলিরা এ মসজিদের নিচে তা করবে।
ফাদার মিউজিলাম বলেন, আমরা ধর্মযুদ্ধ চাই না কিন্তু ইসরায়েল যদি তা চাপিয়ে দেয় তাহলে খ্রিস্টানরা মুসলমানের পাশে দাঁড়াবে।ফাদার মিউজিলাম এমন এক সময় এ কথা বললেন যখন ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার পর যুদ্ধের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ফাদার বিশ্বের কাছে ইসরায়েলের ধর্মীয় সম্প্রসারণ রুখে দাঁড়াতে বলেন।
তিনি বলেন, ইহুদি-খ্রিস্টান মৌলবাদীদের হাতে পবিত্র জেরুজালেম নগরী ও আল-আকসা মসজিদ রক্ষায় সকল খ্রিস্টান, মুসলমানদের পাশে রয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর উচিত ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলি আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করা।
ফাদার মিউজিলাম ফিলিস্তিন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী করার সিদ্ধান্তকে জেরুজালেম ও এর বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা বলে অভিহিত করেন। বলেন, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত মস্ত বড় ভুল।
এছাড়া ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের নেতাদের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে এমন মন্তব্য করে ফাদার মিউজিলাম বলেন, এর নেতারা একদিকে, আর ফিলিস্তিনিরা আরেক বিশ্বে অবস্থান করছে। ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তিনি ফিলিস্তিনিদের ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর কৌশল গ্রহণের আহবান জানান।
ফাদার বলেন, জেরুজালেমকে মুসলমান বা খ্রিস্টানদের বলা ভুল। ফিলিস্তিনি হিসেবে আমরা চাই এটি আরবের কারণ এটি আরবের ভূমিতেই অবস্থিত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি যুবকদের সামরিক কর্মকান্ডে যুক্ত করে ফিলিস্তিনি সেনাবাহিনী গঠনের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের সংগঠন হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জেরুজালেমে ইসলামি-খ্রিস্টীয় কাউন্সিল।
ফাদার মিউজিলাম বলেন, জেরুজালেম ফিলিস্তিনিদের চিরন্তন মাতৃভূমি ও রাজধানী। আন্তর্জাতিক বৈধতা, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ও অসলো চুক্তি ভঙ্গ করে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি বিশ্বকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র এসব প্রস্তাব ও আন্তর্জাতিক চুক্তিকে পদদলিত করেছে। তিনি বলেন, দুই রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সংকট সমাধানের প্রকল্প অনেক দিন আগের নেওয়া। ফিলিস্তিনিরা আর কাউকে বিশ্বাস করে না। তারা তাদের অস্ত্র, প্রতিরোধ ও রক্তের উপর বিশ্বাস করে। আল আকসা মসজিদ ইসলামি বিশ্বাসের অংশ। একমাত্র সমাধান হলো প্রতিরোধ ও গণআন্দোলন।
এদিকে মার্কিন নীতি রুখে দিতে গঠন হচ্ছে হামাস-হিজবুল্লাহর যৌথ কমান্ড। লেবাননভিত্তিক নিরাপত্তা সূত্রটি দেশটির ‘দি ডেইলি স্টার’ সংবাদ মাধ্যমকে মঙ্গলবার জানিয়েছেন, যৌথ সমন্বয় কমান্ড প্রতিরোধকামী দু’টি সংগঠনের মধ্যে রাজনৈতিক, সামরিক এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে যেকোনো অভিযান পরিচালনা করবে।
যৌথ কমান্ড হিজবুল্লাহ , হামাস এবং ইরাকের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী ‘পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিট’’ বা হাশদ আশ-শাবি এবং অন্যান্য প্রতিরোধকামী সংগঠন থেকে প্রতিনিধি যোগার করে ফিলিস্তিনির অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে একত্রিত করবে বলে ওই সূত্রটি জানিয়েছে।