অনলাইন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সারাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির গৌরবময় ঐতিহ্য আরও সুদৃঢ় করতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
‘বড় দিন’ উপলক্ষে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) বঙ্গভবনে খ্রিস্টান ধর্মের লোকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এদেশের সব ধর্মের মানুষ পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ। দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐহিত্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।’
এদেশে সুদীর্ঘকালের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে উল্লেখ করে তিনি একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এ বছর বাংলাদেশে বড় দিন উদযাপন অন্যান্য বছরের তুলনায় আরও বেশি আনন্দময় ও তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, পোপ ফ্রান্সিস প্রথমবারের মতো এ বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ সফর করেছেন। এসময় তিনি এদেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগণের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের অনুভূতি জেনেছেন।’
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, ‘তার (পোপ) এই সফর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে আরও উজ্জ্বল করবে।’
তিনি রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার উল্লেখ করে বলেন, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
আব্দুল হামিদ বড় দিন উপলক্ষে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যীশুখ্রিস্টকে মুক্তির দূত ও আলোর দিশারী হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীকে শান্তির আবাস ভূমিতে পরিণত করতে তিনি খ্রিস্ট ধর্মের সুমহান বাণী প্রচার করেছেন। ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণই ছিল যীশুখ্রিস্টের দর্শন।’
তিনি বলেন, ‘যীশুখ্রিস্ট জাগতিক সুখের পরিবর্তে ত্যাগ, সংযম ও দানের মাধ্যমে পরমার্থিক সুখ অর্জনকে গুরুত্ব দিয়েছেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ সমস্যা সঙ্কুল বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যীশুখ্রিস্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক।’
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং তার স্ত্রী রাশিদা খানম বঙ্গভবনে এই অভ্যর্থনার আয়োজন করেন। এখানে মোমের আলোতে একটি ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও, বিদেশি মিশনগুলোর রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধি, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, ধর্মীয় নেতা ও পেশাজীবীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে একদল শিল্পী ক্রিসমাস সংগীত পরিবেশন করেন।
রাষ্ট্রপতি পরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ক্রিসমাস কেক কাটেন।
সূত্র: বাসস
এসএস/