রকিব মুহাম্মাদ
ডেস্ক, আওয়ার ইসলাম
সিরিয়াকে রক্ষা এবং সহায়তার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার ক্রেমলিনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার সোচির কৃষ্ণ সাগর রিসোর্টে সাক্ষাৎ করেছেন এ দুই রাষ্ট্রনেতা।
বিবিৃতিতে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং সিরিয়ায় রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর ব্যাপারে আলোচনা করেছেন তারা। সিরিয়ায় গত সাত বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। সংঘাত সমাধানে আগ্রহী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন আসাদ। পরে আসাদের সহযোগিতার প্রশংসা করেন পুতিন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে, পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রাশিয়ায় এসে চার ঘণ্টা অবস্থান করেন আসাদ।
২০১১ সালে দেশটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো রাশিয়া সফরে গেছেন আসাদ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাশার রুশ সফরে আসার পর ২০ নভেম্বর দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে বৈঠকটি হয়। পরে আসাদের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে পুতিন টেলিফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের অবহিত করবেন বলেও ক্রেমলিন জানিয়েছে।
বৈঠকে আসাদ সিরিয়ার সঙ্কট সমাধানের চেষ্টায় রাশিয়ার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বরেন, “এই মুহুর্তে, বিশেষ করে যখন আমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ জয় অর্জন করতে পেরেছি, এখন আমাদের নিজেদের স্বার্থেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার পথে অগ্রসর হওয়া উচিত।
বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্জিত রাজনৈতিক প্রজ্ঞাও আমাদেরকে ওই পথেই অগ্রসর হতে বলছে; এই প্রক্রিয়ায় বাইরের খেলোয়াড়রা যেন হস্তক্ষেপ না করতে পারে সেজন্য রাশিয়ার সহযোগিতাকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি।”
আজ বুধবার সিরিয়া সংকটের গুরুত্বপূর্ণ দুই অংশীদার ইরান ও তুরস্কের শীর্ষনেতাদের সঙ্গেও পুতিনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। রুশ টেলিভিশন জানায়, পুতিন বলেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুরোপুরি জয়ী হতে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।
কিন্তু সিরিয়ায় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের যৌথ কর্মকা- যতটা জরুরি, একই রকম জরুরি সামরিক অভিযানের ইতি টানাও।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় ২০১৫ সালের অক্টোবরে রাশিয়ার হামলা শুরুর এক মাস পর আসাদ এবং পুুতিন মস্কোতে সাক্ষাৎ করেন। সিরিয়া সরকারের প্রধান মিত্র হিসেবে দেশটিতে লড়াই করছে রাশিয়া। সরকারি বাহিনীকে রুশ সমর্থনের জেরে ওই অঞ্চলে প্রক্সি যুদ্ধ শুরু হয়।
দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত মাসে সিরিয়া সরকার ও বিরোধীরা কাজাখস্তানের রাজধানীতে বৈঠকে বসেন। কয়েক বছর ধরে সিরিয়া যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়।
সিরিয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত দেশটির প্রায় চার লাখ ৬৫ হাজার মানুষ নিহত ও আরো এক কোটি ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সূত্র : আলজাজিরা।
আরএম