প্রিয় উলামায়েকরাম ও স্নেহের তালিবে ইলম শিক্ষার্থীগণ!
আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানী যে আমরা মাদরাসার শহর ঢাকাতে আছি। আমি নিজেও জানি না ঢাকায় মাদরাসার সংখ্যা কত। আজ আমরা এই মাদরাসার শহরে নতুন একটি ইলমি মারকাজ একটি চিরসবুজ বৃক্ষ রোপণ করতে যাচ্ছি। যা এই শহরের সৌন্দর্যকে দিগুণ করে তুলবে।
ইংরেজদের সময়েও ঢাকায় মাদরাসা ছিল। ক্রমশ তা বেড়েই চলেছে। আমারা (দারুল উলুমে) ৬ বিষয়ে লেখাপড়া করাই। কুরআনের কারিম, হাদিস, ফিকাহ, আর বাকি তিনটা হলো এই তিনটার উসুল- উসুলে হাদিস, উসুলে ফেকাহ, উসুলে তাফসীর ।
এই ৬ টা হলো আসল যাকে উলুমে আলিয়া বলা হয়। আর এই ছয় এলম জানার জন্য উর্দুভাষা খুবই জরুরি। আর উর্দু শেখার জন্য এমলা সহিহ করা লাগবে। আর ফার্সির গুরুত্বও কম নয়। একটা আরেকটির পরিপূরক। আরবির জন্য নাহু-সরফের জ্ঞান থাকা লাগবে।
আমাদের আকাবিরদের পদ্ধতি ছিল নিচের থেকে মজবুত করে গড়ে তোলা। আমাদের সব বিষয়ে জানা থাকা লাগবে। যাতে করে দাওয়াতের ময়দানে কাজ করতে পারি। লেখার মাধ্যমে, বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলামের খেদমত করতে পারি।
লেখালেখি মিডিয়া এমন একটি জগৎ, যার মাধ্যমে সত্য কথা সাহসের সাথে বলা যায়। কিন্তু আমরা তো লিখতেই জানি না। একজন মানুষ তাবলিগে এক চিল্লা দেওয়ার পরে, দীর্ঘক্ষণ বয়ান করতে পারে। কিন্তু আমাদের মাদরাসার ছাত্ররা বারো বছর লেখাপড়া করেও বক্তৃতায় দুর্বল থাকে। আমাদের জন্য এটা খুবই দু:খজনক বিষয়।
এজন্য, আমাদের দায়িত্ব ছাত্রদের গোড়া থেকে মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে বাতিল ফেরকা থেকে গা বাঁচাতে পারি এবং তাদের রদ করতে সচেষ্ট হই।
আমাদের দর্শন শাস্ত্রেও বুৎপত্তি অর্জন করতে হবে। ফালসাফা-দর্শনের জ্ঞান থাকাটাও জরুরি। কারণ আজ চতুর্দিক থেকে ইসলামের ওপর যে অতর্কিত হামলা হচ্ছে তা আমাদের যুক্তির মাধ্যমে রদ করতে হবে।
আজ লেখার শক্তি, বলার সাহস, বাতিলকে প্রতিহত করার শক্তি না থাকার কারণে ইসলামের খেদমত করতে পারছি না, অর্জিত ইলমের সঠিক প্রয়োগ করতে পারি না।
ইতিহাসের পাতায় চোখ মেললে দেখবে, হযরত সিদ্দিকে আকবার আবু বকর, ওমর ফারুক এবং হযরত উসমান রা. পর্যন্ত মদিনা মুনাওয়ারাতে মুসলমানদের খেলাফত ছিল। সকল জ্ঞানের খাজানা ছিল মদিনাতে।
এরপর, হযরত আলি রা. মদিনা থেকে কুফার রাজধানী পরিবর্তন করার পর সবাই রাজধানীতে ইলমের চর্চা করা শুরু করল। আসলে এটাই নিয়ম, রাজধানী যেখানে হয়, সেখানেই সবাই একত্রিত হয়।
তারপর, মিশরের ৫০০ বছরের শাসনামলে সেখানে ইলমের চর্চা শুরু হয়। ৭০০ শ বছর ইরাকে।
হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ. ভারত বর্ষে এলমের খাজানা নিয়ে এসেছেন।আরব থেকে তার মাধ্যমে যে ইলমের খাজান উপমহাদেশে আসে, তা দারুল উলুম দেওবন্দ ধরে রেখেছে।
ইলমের মারকাজের পরিবর্তনের কারণে, দেশে দেশে ইলমের চর্চা কমতে থাকে। ধীরেধীরে শিরক, বেদয়াত, ইলহাদের মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য, আমাদের ঈমান এবং দেশকে বাঁচাতে হলে ইলমের চর্চা অব্যাহত রাখতে পারে।
সংক্ষেপিত এবং পরিমার্জিত/ ভাষান্তর- রকিব মুহাম্মাদ
[সারাদেশের তরুণ যুবারা নবীজিকে চিঠি লিখছেন, হৃদয়ের আকুতি মনের আবেগ ভালোবাসার নজরানা পেশ করছেন রওজা পাকে। আপনি বসে থাকবেন কেন? লিখে ফেলুন নবীজিকে নিয়ে আপনার শ্রেষ্ঠ চিঠি। পাঠিয়ে দিন আওয়ার ইসলামের ইমেইলে। সিরাজ চর্চায় অনন্য ভূমিকা রাখুন। সেরাদের জন্য পুরস্কার সম্মাননা তো থাকছেই....]