আওয়ার ইসলাম : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘আসল ঘটনা হলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রচুর সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এটা সত্যিই খুব উদ্বেগের বিষয়। তবে ভারতের লক্ষ্য, কীভাবে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায়, সে দিকটা নিশ্চিত করা, যেটা মোটেই সহজ কাজ নয়।’
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘কানেক্টিং দ্য বে অব বেঙ্গল ইন্ডিয়া, জাপান অ্যান্ড রিজিওনাল কো-অপারেশন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এসব কথা বলেন।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা জরুরি এবং নিন্দা না করে বরং বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টা করা উচিত বলে মন্তব্য করলেন এস জয়শঙ্কর।
তিনি বলেন, ভারতের লক্ষ্যই ছিল রোহিঙ্গারা কীভাবে নিজেদের দেশে ফেরত যেতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। এই ইস্যুতে ভারত এরই মধ্যে তার উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছে এবং বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনাও করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নতুন করে সহিংসতার কারণে ২৫ আগস্টের পর থেকে গত এক মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা।
এর আগেই অবশ্য বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা প্রায় চার লাখের কাছাকাছি। মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের মোকাবিলা করাটাই এখন বাংলাদেশের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে, ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। যাদের বেশিরভাগই রয়েছে ভারতের জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি ও রাজস্থানে।
এসব ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। ভারত সরকারের অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ভারতের মাটিতে চলে আসা রোহিঙ্গারা যথেষ্ট হুমকি।
তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে বলেও ভারত সরকারের দাবি। যে কারণে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে চলতি বছরের গত ১৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকারও বার্তা দেন।
আরএম