শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

রোহিঙ্গা ট্রাজেডি : শুধু বিবৃতিতেই সমাধান চাচ্ছে বিশ্বনেতারা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ শোয়াইব : মিয়ানমারে যা ঘটছে মুসলিম উম্মাহর জীবনে তা নতুন ট্রাজেডি নয়।  ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির পর থেকে দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে যা ঘটেছে এবং এখনও ঘটছে মিয়ানমারের বেদনাদায়ক ঘটনাপ্রবাহ তারই প্রতিচ্ছবি।

রোহিঙ্গা এবং ফিলিস্তিনি উভয় জনগোষ্ঠী বারবার নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশান্তরিত হয়েছে। হারিয়েছে তাদের বাড়িঘর ও সহায়-সম্বল। হাজার হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে। গোটা পরিবারকে জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। পাঁচ বছর বয়সী শিশুদেরও শিরুচ্ছেদ করা হয়েছে। নারীদের ধর্ষণ এবং সীমান্তে স্থলমাইন পুঁতে রাখা হয়েছে।

হাজার হাজার নির্দোষ বেসামরিক লোক বাংলাদেশের নিরাপদ ভূখণ্ডে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য যখন প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সীমান্ত এলাকা ও নোম্যানস ল্যান্ডে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখছে।

১৯৮২ সালের বর্মী নাগরিকত্ব আইনের বাস্তবায়নের পর থেকে রোহিঙ্গারা সরকারিভাবে নাগরিত্ব হারায়। এরপর নিপীড়নের মাত্রা বাড়তে থাকে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম হলেও সংখ্যালঘু রয়েছে হিন্দু।

২০১৫ সালের আগের রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট এবং ২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দমনাভিযানে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রায় ১৩ লাখের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এক লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে শিবিরেই আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তারা বাড়িঘর ও ভিটেমাটি ছাড়া, অর্থাৎ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত।

১৯৭৮, ১৯৯১-৯২, ২০১২, ২০১৫ এবং ২০১৬-১৭ সালে বারবার সামরিক দমনাভিযানের শিকার হতে হয়েছে রোহিঙ্গাদের। কিন্তু এই জঘন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বিশেষত মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শুধু বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব এড়াতে চাচ্ছে বিশ্বনেতারা।

জাতিসঙ্ঘ বলেছে এটি ‘এথনিক ক্লিনজিং’ তথা জাতিগত নির্মূল অভিযান। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ  এই নিপীড়নকে ‘বর্ণবৈষম্যবাদের’ সাথে তুলনা করেছে।

২০১৩ সালের জাতিসঙ্ঘ রিপোর্টে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের ‘অত্যন্ত নির্যাতিত সংখ্যালঘু’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে (এইচআরডব্লিউ), মিয়ানমারের আইনে রোহিঙ্গাদের দেশটির অন্যতম জাতিগত সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।

অথচ অষ্টম শতাব্দীতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইসলামের আগমনের সময় রোহিঙ্গারা সেখানে ছিল বলে ইতিহাস চিহ্নিত করেছে। এ জাতীয় বিবৃতি ছাড়া  বিশ্বনেতাদের পক্ষ থেকে আপাতত কোনো কঠোর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। 

প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু  নিষ্ক্রিয় জাতীয় ভাষণ-বিবৃতি ও আলোচনা-সমালোচনায় কি রোহিঙ্গা সংকটের আদৌ কোনো বিহিত হবে? বিশ্বনেতাদের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

 


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ