আওয়ার ইসলাম: ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মুফতী ফয়জুল্লাহকে আজ বিকেলে আটক করেছিল পুলিশ। তবে কিছুক্ষণ পরই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মুফতি ফয়জুল্লাহর সঙ্গে ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুবায়ের আহমদকেও আটক করা হয়েছিল।
জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় মুফতি ফয়জুল্লাহকে। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর ছেড়ে দেয়া হয় এই দুই নেতাকে।
রোববার বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছিল দলটি। আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশে বাধা ও নামাজরত মুসল্লিদের হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ ডেকেছিল। মিছিল শেষে মুফতি ফয়জুল্লাহ ও মাওলানা জুবায়ের আহমদকে আটক করা হয়।
মসজিদুল আকসার প্রবেশপথে নিরাপত্তা চৌকি ও তল্লাশি গেট বসিয়ে মসজিদে আকসাকে ঘিরে রাখা, মুসলমানদের জুমার নামাজ আদায়ে বাধা দেয়া, নিরীহ মুসলমানদের ওপর ইসরাইলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে এবং ইসরাইলি দখলদারদের হাত থেকে মসজিদে আকসাকে মুক্ত করার দাবীতে বিকেলে ইসলামী ঐক্যজোটের বিক্ষোভে উত্তাল ছিল বায়তুল মোকররম ও পল্টন এলাকা। এসময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবিলম্বে মসজিদুল আকসার প্রবেশপথ খুলে দেয়ার ও হামলা বন্ধের আহবান জানান। এছাড়া ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান নেতারা।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ইসরাইলের জন্মই হয়েছে ইসলামশূন্য বিশ্ব গড়ার জন্য। সম্প্রতি মসজিদুল আকসায় প্রবেশপথে তারা নিরাপত্তা চৌকি ও তল্লশি গেট বসিয়ে মসজিদে আকসাকে যেভাবে ঘিরে রেখেছে এবং মুসলমানদের জুমার নামাজ আদায়ে বাধা দিচ্ছে এবং মুসলমানদের যেভাবে হত্যা করছে, নির্যাতন নিপীড়ন করছে এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। তিনি ইসরাইলি দখলদারদের হাত থেকে মসজিদে আকসাকে মুক্ত করতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথি ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ইসরাইল মসজিদে আকসায় আগ্রাসন চালিয়ে মুসলমানদের হৃদয় রক্তাক্ত করছে। নির্বিঘ্নে মুসলিমদের আল-আকসাতে প্রবেশ করতে দিতে হবে। ইসরাইলের কোনো অধিকার নেই মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করার। কারণ মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় তার চাইতে বড় যালেম আর কে? ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে'। তিনি বলেন, আল-আকসা মুসলিম উম্মাহর। আল আকসার পবিত্রতা পৃথিবীর সব মুসলিমের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। মসজিদে আকসা মুসলিম উম্মাহকে ডাকছে। বিশ্ব মুসলিমকে এই ডাকে সাড়া দিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে সোচ্চার প্রতিবাদ করার আহবান জানাচ্ছি। ইসলামের প্রতি অন্ধ বিদ্বেষের কারণে আজ যাদের অবস্থান মসজিদুল আকসার বিরুদ্ধে এবং ইসরাইলী সন্ত্রাসীদের পক্ষে তাদেরকে তাবৎ দুনিয়ার মানুষের উদ্বেগ ও অনুভূতিকে সম্মান জানাবার আহবান জানিয়ে মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, ফিলিস্তিন ও ফিলিস্তিনের নাগরিকদের সঙ্গে ইসরাইল যে আচরণ করেছে, তা কেবল সব আইনের লঙ্ঘন-ই নয়, বরং যাবতীয় নীতি নৈতিকতা ও মানবতার প্রতি চরম অশ্রদ্ধা।
বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেম। বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা যুবায়ের আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী মোঃ তৈয়্যেব হোসাইন, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মুসলিম লীগের মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের সহকারী মহাসচিব মাওলানা ফারুক আহমদ, পীরজাদা সৈয়দ মোঃ আহসান, মাওলানা একেএম আশরাফুল হক, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা রিয়াজতুল্লাহ, মাওলানা গাজী হেদায়াত উল্লাহ, মাওলানা আনছারুল হক ইমরান, মাওলানা খোরশেদ আলম, আবুল হাসিম, নুরুজ্জামান প্রমুখ। সমাবেশ শেষে ইসলামী ঐক্যজোটের বিশাল বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানীর বায়তুল মোকররম ও পল্টন এলাকা।
লন্ডনের হাসপাতালে ভর্তি আল্লামা হবিগঞ্জী; দোয়া কামনা
ইসলামি দলের শীর্ষ নেতারা কে কোথায় নির্বাচন করবেন? (২য় পর্ব)
আরআর