পাকিস্তান জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইইউআই-এফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান জানিয়েছেন তারা বিরোধী জোট গঠনের কোনো উদ্যোগ নেবেন না। তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা আমাদের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকেই রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাব। বিরোধী দলগুলোর বড় কোনো জোট গঠনের ব্যাপারে আমাদের পার্টির কাউন্সিল রাজি নয়।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ইসলামাবাদে এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন, নানা বিষয়ে মাঝেমধ্যে কিছু মিল পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে একসাথে কাজ করা যেতে পারে। সংসদে থাকা দলগুলোর সঙ্গে মিলে কীভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে কৌশল আমাদের শুরা (পরামর্শ পরিষদ) ও কার্যনির্বাহী কমিটি ঠিক করবে।
মাওলানা বলেন, একমাত্র সরকারই আনুষ্ঠানিকভাবে জোট গঠন করে। বিরোধী দলে সাধারণত স্থায়ী বা আনুষ্ঠানিক জোট হয় না। এখন পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর কোনো স্থায়ী জোট নেই। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে একসাথে কাজ করার সুযোগ আছে।
ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া, বালুচিস্তান ও সিন্ধ প্রদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। অনেক জায়গায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকারের পারফরম্যান্স শূন্যের কাছাকাছি। সরকার ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। মানুষ কোনো ধরনের সহায়তা পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে আমরা জালিয়াতিপূর্ণ বলেছিলাম, মানিনি। ২০২৪ সালের নির্বাচন সম্পর্কেও আমাদের একই মত। জনগণের রায়কে মানা হয় না। নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, পছন্দের সরকার চাপিয়ে দেওয়া হয়। প্রদেশগুলোর অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, আর আমরা প্রদেশগুলোর পাশে থাকি। জনগণ যেন স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটাই আমরা চাই।
মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, জেইইউআই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার সংগ্রামের দৃঢ় সমর্থন করে যাবে। ইসরায়েল একটি অবৈধ রাষ্ট্র, দখলদার। এটি একটি যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক আদালত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপ তা মানছে না। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ও অনেক রাষ্ট্র এদের অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি ইসরায়েল বলে সে আত্মরক্ষার যুদ্ধ করছে, তবে সাধারণ মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ কেন? দুনিয়াতে কি আত্মরক্ষার নামে কখনও নারী, শিশু আর বৃদ্ধদের ওপর হামলা করা হয়?
শেষে তিনি জানান, ১১ মে পেশোয়ার ও ১৫ মে কোয়েটায় ‘মিলিয়ন মার্চ’ হবে। আমরা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বিশ্বকে বার্তা দেব। এখন এটা শুধু ফিলিস্তিনের বিষয় নয়, এটা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। সূত্র: রোজনামায়ে জং
এমএইচ/