আওয়ার ইসলাম: মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে স্ব স্ব ক্ষেত্রে কাজের অবদানের জন্য ‘মাওলানা আলী আশরাফ রহ. সম্মাননা পদক’ পেয়েছেন দেশের নবীন-প্রবীন ৫ জন আলেম।
কুমিল্লার ময়নামতিতে অবস্থিত মাদরাসায়ে আশরাফুল উলুম বুধবার সন্ধ্যায় ‘দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার প্রতীক আলেম সমাজ’ শীর্ষক সেমিনারে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। সেমিনারের সভাপতি মাওলানা মাহবুবুর রহমান আশরাফীর হাত থেকে সম্মাননা গ্রহন করেছেন, দ্বীনি শিক্ষা প্রসারে বিশেষ অবদানের জন্য কুমিল্লা জেলা কওমি মাদরাসা সংগঠনের সভাপতি, পীরে কামেল আল্লামা নুরুল হক, ইসলামি চিন্তা-গবেষণা ও সাংবাদিকতার জন্য দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, ইসলামি চিন্তা-গবেষণা ও অনুবাদ সাহিত্যের জন্য মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, ছড়া-কবিতা ও সৃজনশীল লেখালেখির জন্য দৈনিক আমার বার্তার সহ সম্পাদক মাসউদুল কাদির, সৃজনশীল লেখালেখি ও সাংবাদিকতার জন্য দৈনিক আমাদের অর্থনীতির বিভাগীয় সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব।
[caption id="" align="alignnone" width="960"] অনুষ্ঠানে আগে বৃক্ষরোপন করেন আলেমগণ[/caption]
মাদারাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আনিসুর রহমান আশরাফীর উপস্থাপনায় সম্মাননা পাওয়া ৫ জনসহ বক্তব্য রাখেন, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সিনিয়র বিভাগীয় সম্পাদক মুফতি এনায়েতুল্লাহ, কারেন্টনিউজের প্রধান সম্পাদক আমিমুল ইহসান, মাদরাসাতুল কুরআনের প্রিন্সিপাল মাওলানা গাজী মুহাম্মদ সানাউল্লাহ, উত্তরার মাইলষ্টোন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছফিউল্লাহ হাশেমী, রকমারি ডটকমের পরিচালক মাওলানা ইহসানুল হক প্রমুখ।
দিনভর উৎসব-আয়োজন শেষে সন্ধ্যায় সেমিনারে দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে আলেমরা সরাসরি অংশ গ্রহণ করেছে। অনেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন, জনগণ আলেমদের প্রতি চিরকালই শ্রদ্ধা ভক্তি ও আস্থা রাখেন। সেই আস্থাশীল আলেমদের উৎসাহেও জনতা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের জানাজা, দাফন-কাফন, পরিবারের প্রতি সমবেদনাও আলেমরা করেছে। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আলেম সমাজকে আলাদা করে দেখা মোটেও উচিত হবে না।
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন বলেন, পাকিস্থানি হানাদাররা যখন একাত্তরে বাংলাদেশে রক্তের নোংরা উৎসব করছিল, দেশ ও দেশের বাইরের শান্তিকামী ও স্বাধীনতাকামী আলেমরা বাংলাদেশের অধিকারের প্রশ্নে এগিয়ে এসেছিল। ভারতের মাওলানা আসাদ মদনী রহ. মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রিয়ভাবে মাওলানা আসাদ মদনী রহ.কে সম্মাননাও দিয়েছে। ইতিহাস বলছে, পাকিস্থানের মুফতি মাহমুদুল হাসান, মাওলনা আবদুল্লাহ দখোস্তি, মাওলানা গোলাম গওস হাজারবি তৎকালীন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে এসে দেখা করেছেন।
বাংলাদেশ গঠন ও স্বাধীনতার পক্ষে তাদের স্পষ্ট অভিমত পেশ করে মুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সুতরাং স্বাধীনতার ইতিহাসের পরতে পরতে আলেমদের অবদান আছে। ইতিহাস চেপে রেখে এককভাবে মুক্তিযোদ্ধের চেতনা বাণিজ্য মোটেও উচিত হবে না।
বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সিনিয়র বিভাগীয় সম্পাদক মুফতি এনায়েতুল্লাহ বলেন, আজকের তরুল প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তোলে ধরতে হবে। মাদরাসা সিলেবাসে আরও গুরুত্বের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়াতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ কোন দল বা ব্যক্তির একক সম্পদ নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। মুক্তিযুদ্ধে আলেমদের অংশ গ্রহণের ইতিহাস আরও ব্যাপকভাবে প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
আরআর