আওয়ার ইসলাম : ভাষার অধিকার আদায়ে বাঙালির ত্যাগকে স্বীকৃতি দিয়েছে সারা বিশ্ব। জাতিসংঘ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী গত বেশ কয়েক বছর ধরে সারা পৃথিবীতেই ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে পালন করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে অর্জিত হয়েছে ভাষার গৌরব এবং যারা ১৯৫২ সালে বাঙালির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলো সেই পাকিস্তানে কীভাবে পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারি?
করাচির সাংবাদিক মনির আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, কাগজে কলমে ভালোভাবেই ২১ শে ফেব্রুয়ারি 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' হিসেবে উদযাপন করা হয় পাকিস্তানে।
করাচি, ইসলামাবাদ ও লাহোরের মতো বড় শহরে ঘটা করেই পালন করা হয়। কিছু সেমিনার হয়। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু আলোচনাও হয়। প্রভাত ফেরীর আয়োজনও দেখা যায় কোন কোন ক্ষেত্রে।
এ বছর ফেব্রুয়ারির ১৮ ও ১৯ তারিখে একটি সাহিত্য উৎসবও হয়েছে বলে জানাচ্ছেন মি. আহমেদ।
কিন্তু কেন ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়, কী ঘটেছিল ১৯৫২ সালের সেই দিনটিতে, সে ব্যাপারে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বচ্ছ ধারণা নেই বলে উল্লেখ করেছন তিনি।
কেবল ১৯৫২ সালে উর্দুর মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা এবং একটি ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে কিছু ধারনা রয়েছে তাদের। দেশটির পাঠ্যক্রমেও এ বিষয়ক পূর্ণ ইতিহাসের অনুপস্থিতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মনির আহমেদ।
বহু জাতিগোষ্ঠীর দেশ পাকিস্তানে ৬৫ থেকে ৭২টির মতো বিভিন্ন ভাষার চর্চা রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এই সবগুলো ভাষার সঠিক চর্চা এবং সব গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় লেখাপড়ার সুযোগ নেই।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আঞ্চলিক ভাষাভাষীগণ মাতৃভাষার অধিকারের ব্যাপারে কথা বলেন। বিশেষত পাঞ্জাবি ভাষাভাষীগণ মাতৃভাষার স্বীকৃতি ও অধিকারের ব্যাপারে জোরালো আন্দোলন করছে। ধীরে ধীরে দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও। এ বছর পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ভাষা সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম। সুতরাং ভাষার অধিকারের ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাতৃভাষা আত্মপরিচয়ের অংশ।
সূত্র : বিবিসি ও রেডিও পাকিস্তান
-এআরকে