আওয়ার ইসলাম : পুরোপুরি মুখ ঢেকে বোরকা পরিধান অস্ট্রিয়ায়া নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেয়ায় দেশটির পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে মনে করছে পর্যটন শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাছাড়া এতে মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অন্যান্য ব্যবসা বাণিজ্যও।
অস্ট্রিয়ার পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা বোরাকা বাতিলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন্। দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভিয়েনা ছাড়াও জেল ও স্কাই রিসোর্ট এলাকায় আপাদমস্তক বোরকা পড়ে পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এধরনের প্রস্তাবনায় যারা এমন বোরকা পড়ে আসবেন তাদের দেড়’শ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করার কথা বলা হয়েছে। এমন কি কোনো নারী যদি মুখ থেকে বোরকার আবরণ খুলতে না চান তাহলে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।
ভিয়েনা চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি আন্দ্রিয়া স্টাইনলাইনার বলেছেন, এধরনের বোরকা নিষেধাজ্ঞার উদ্যোগের বিষয়টি অস্ট্রিয়ার পর্যটন খাতে কি প্রতিক্রিয়া ফেলবে তা কি কেউ ভেবে দেখেছে? মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটকরা অস্ট্রিয়ায় এসে প্রচুর অর্থ খরচ করেন এবং এদেশের পর্যটন খাতকে অন্যতম দ্রুত গতিশীল খাত হিসেবে গড়ে ওঠার ব্যাপারে ভূমিকা রাখছেন।
ভিয়েনা চেম্বার অব কমার্সের পর্যটন প্রধান মার্কাস গ্রেইসলার বলেন, বোরকা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে শুনে আমরা পর্যটন খাতের ক্ষতির আশঙ্কা নিয়ে আতঙ্কিত। কারণ এধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করবে।
ভিয়েনার ম্যারিয়ট হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে তারা দেখছে আরব দেশগুলোর থেকে গত কয়েক বছরে পর্যটকদের আগমন বাড়ছে। গ্রীষ্মকালে তাদের আগমন লক্ষ্য রেখে আরবি ভাষা জানে ও ওই অঞ্চলের রান্না জানে এমন লোকবলও নিয়োগ করা হয়েছে। ম্যারিয়ট হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ডিয়েতা ফেঞ্জ বলেন, মাঝরাত থেকে ভোরের আগ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত পর্যটকদের খাবার সরবরাহ করতে হয়। কারণ এধরনের পর্যটকরা সারারাত জাগতে ও ঘুম থেকে বিলম্বে উঠতে পছন্দ করেন। এখন আপাদমস্তক বোরকা নিষিদ্ধ হলে এধরনের পর্যটকরা অস্ট্রিয়ায় না এসে অন্য কোনো দেশে চলে যাবেন।
ম্যারিয়ট হোটেলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যেসব নারী পর্যটকরা আসেন তাদের অন্তত ৩০ ভাগ পুরো মুখ ঢাকা বোরকা পড়েন। এমন কি এধরনের নারী পর্যটকরা তাদের দাদি ও নানি সহ পুরো পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসেন। কোনো কোনো দলে ১২ জন পর্যন্ত পর্যটক থাকে।
প্রতিবছর অস্ট্রিয়ার পিকচারেস্কু জেল আম সৈকত ও কাপরান এলাকায় ৭০ হাজার পর্যটক আসে উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে। তাই বোরকা বাতিলের বিষয়টি নিয়ে হোটেল কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য না করে এক বিবৃতিতে বলছেন, পর্যটকদের ধর্ম, রাজনীতি ও আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখতে চাইনা। কিন্তু হোটেল নিইউ পোস্ট’এর মালিক হেরাল্ড ব্রাকনার বলেছেন, সরকার বোরকা বাতিলের আইন করতে চাচ্ছে যাতে পুনরায় নির্বাচিত হতে পারে, তাদের উচিত আমাদের পর্যটকদের কাছে এসে বলা যে তারা বোরকা পরিধান করতে পারবেন না।
-এআকে