আওয়ার ইসলাম: হুন্ডিতে রেমিট্যান্স ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধে মোবাইল ব্যাংকিং নীতিমালায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালায় এসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে একজনের একাধিক মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থাকতে পারবে না। একদিনে ২বারের বেশি সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকার বেশি পাঠানো (ক্যাশ ইন) যাবে না। মাসে ২০ বারের বেশি লেনদেন করা যাবে না। একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ১০ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করতে পারবে না।
এছাড়াও একটি মোবাইল হিসাবে টাকা জমা হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই হিসাব থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার বেশি নগদ উত্তোলন করা যাবে না ।
কমিয়ে আনা হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ক্যাশ-ইন, ক্যাশ-আউটসহ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে অর্থ হস্তান্তরের পরিমাণ। এর মাধ্যমে দেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম সংকোচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়। মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ স্বাক্ষরিত সার্কুলারটি সেবা প্রদানকারী সব ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক দিনে ২ বার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা (ক্যাশ-ইন) করতে পারবে।
মাসে সর্বোচ্চ ২০ বার লেনদেন করতে পারবে মোট ১ লাখ টাকা। একইভাবে একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ১০ হাজার টাকা, মাসে সর্বোচ্চ ১০ বার মোট ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
যদিও আগের নীতিমালা অনুযায়ী একজন গ্রাহক দিনে ৫ বার জমা (ক্যাশ-ইন) ও ৩ বার উত্তোলন (ক্যাশ-আউট) করতে পারতেন। এক্ষেত্রে গ্রাহক প্রতিদিন নগদ ২৫ হাজার টাকা জমা ও উত্তোলন এবং মাসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ জমা ও উত্তোলন করতে পারতেন।
তবে পি টু পি পদ্ধতিতে অর্থহস্তান্তরের ক্ষেত্রে পূর্ব নির্ধারিত সীমা তথা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং মাসে মোট ২৫ হাজার টাকা বহাল থাকবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস দ্রুত বিকাশমান একটি সেবা, যা অতি অল্প সময়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশেষতঃ নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মাঝে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি সেবাটির অপব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর।
এতে বলা হয়, একজন ব্যক্তি কোন এমএফএস প্রোভাইডারের সঙ্গে একাধিক মোবাইল হিসাব চলমান রাখতে পারবেন না। সে প্রেক্ষিতে কোন গ্রাহকের একই জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড বা অন্য কোন পরিচয়পত্রের বিপরীতে একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক মোবাইল হিসাব থাকলে ওই গ্রাহকের সাথে আলোচনা করে তার বেছে নেয়া যে কোন একটি মোবাইল হিসাব চালু রেখে অন্য হিসাবগুলো বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি এই ব্যবস্থা গ্রহণ কঠিন হলে যে হিসাবটিতে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে তা চালু রেখে অন্য হিসাবগুলো বন্ধ করতে হবে।
উল্লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের সময় যে সব মোবাইল হিসাব বন্ধ করা হবে তার সমুদয় স্থিতি সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে পরিশোধের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কোনো মোবাইল হিসাবে ৫ হাজার টাকা বা তার বেশি নগদ অর্থ জমা (ক্যাশ-ইন) বা উত্তোলন (ক্যাশ-আউট) করার ক্ষেত্রে গ্রাহক কর্তৃক তার পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড বা তার ফটোকপি এজেন্টকে প্রদর্শন করতে হবে এবং এজেন্ট গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন।
ডিএস