শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ২৮ চৈত্র ১৪৩১ ।। ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল নাহিদ মানবতার জন্য আপনিও আসুন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে: শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসরায়েলকে প্রতিহত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ দরকার: বিএনপি মাদরাসাছাত্রদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে কাজ করছে এনসিপি : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মুসলিম রাষ্ট্রের ওপর এখন সশস্ত্র ল’ড়াই ফরজ: মুফতি তাকি উসমানি ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান শায়খে চরমোনাই’র নড়াইলে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলায় আ. লীগের ৪৮ নেতাকর্মী কারাগারে বিনা খরচে আরও কর্মী নেবে জাপান, সমঝোতা স্মারক সই সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সেই বিতর্কিত ব্যক্তি আটক জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, নাম নির্ধারণ

কিডনিতে পাথর কেন হয় ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

dr-shamim-ahmadআওয়ার ইসলাম: বিভিন্ন কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে কিডনি সংক্রমণ হয়ে তার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে। আর চিকিৎসা করার পরও পুনরায় যাতে না হয়, সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এনটিভির  স্বাস্থ্য বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে কিডনির পাথর বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ।

কিডনিতে সাধারণতঃ পাথর হওয়ার পেছনে কারণ কী এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,  কিডনিতে পাথর হওয়ার কতগুলো ফ্যাক্টর আছে, মেটাবলিক কারণ। আরেকটি পরিবেশগত কারণ। পরিবেশগত বিষয়টি আগে বলি, যেমন, যারা মধ্যপ্রাচ্যে যায় দেখবেন যে প্রায়ই তারা পাথরের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসে। যেখানে গরম আবহাওয়া, খাওয়াদাওয়া –এসবের কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়। জেনেটিক বা বংশগত বিষয়ও আছে, বাবার ছিল ছেলের হচ্ছে।

এখন বলি পাথরগুলো কী দিয়ে হচ্ছে। ক্যালসিয়াম, ফসফেট, অক্সালেট, ইউরিক এসিড এগুলো দিয়ে পাথর তৈরি হয়। এই পাথর কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি এবং প্রস্রাবের রাস্তায় হতে পারে। এই জিনিসগুলো জমাট বেঁধে পাথর তৈরি হয়।

কিডনির ভেতরকার পাথরগুলো কোনো লক্ষণ তৈরি করে না। অর্থাৎ সেখান থেকে প্রস্রাবে কোনো রক্ত যায় না, ব্যথাও তৈরি করে না। যেহেতু লক্ষণ প্রকাশ করে না তাই আমরা বুঝি না। এ অবস্থায় এগুলো ভেতরে ভেতরে বড় হতে থাকে।

অনেক সময়  কিডনিতে পাথর  থাকলে কখনো কখনো ভোঁতা রকমের ব্যথা অনুভূত হয়। মারাত্মক ব্যথা হয় না। তবে পাথর যখন মূত্রনালিতে আসে, তখন এটি নালিটিকে বন্ধ করে দেয়। বন্ধ করে দিলে রেনাল কলিক হয়। এতে ব্যথার অনুভূতি তীব্র হয়। এক ঘণ্টা –দুই ঘণ্টা ব্যথা থাকবে। তারপর আস্তে আস্তে ব্যথা চলে যাবে। তখন ছটফট করবে, ঘেমে যাবে।

ইতিহাস দেখলেই আমরা বলতে পারি, এটা কিডনির পাথর। পাথর শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার হয়। আর একটি বিষয় হলো পাথর যার একবার হয়েছে তার ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে পাথর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে ১০ বছর পড়ে আবার হয়। তাই প্রথমে পাথর হলে অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়ার পর আপনাকে জানতে হবে এই পাথরটি যেন পুনরায় আর না তৈরি হতে পারে।

চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে পাথরগুলো যেনো পুনরায় না হয়  সেই পরামর্শগুলোও ডাক্তাররা গুরুত্বসহ দেন কি না  জানতে চাইলে তিনি বলেন,  হ্যাঁ, দেওয়া হয়। যেসব কারণে পাথর হয়, সেগুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে শরীরে আছে কিনা। যারা ঝুঁকিপূর্ণ, যার পরিবারে ইতিহাস আছে, আগে পাথর হয়েছিল, তার বছরে একবার চেকআপ করা উচিত। তারপরে যেই খাবারে ওই বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।

বড় পাথর থাকলে আজকাল অস্ত্রোপচার করতে হয় না। ল্যাপারোস্কপি করা যায়। ল্যাপারোস্কপি সার্জারির মাধ্যমে পাথরটিকে পুরোপুরি ভেতর থেকে নিয়ে আসে বা ভেঙে নিয়ে আসে।  আর যদি মূত্রনালির নিচের দিকে পাঁচ মিলিমিটার পাথর থাকে, তাহলে প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যাবে। আর যদি বড় পাথর থাকে, তাহলে বের করতে পারবে না। তাহলে ইউরোলজিস্টরা ভেতর দিয়ে ক্যাথেডার দিয়ে ভাইব্রেশন দিয়ে ভেঙে দিতে পারে। আর ওপরের দিকে হলে ল্যাপারোস্কপি সার্জারি করে ভেঙে নিতে পারে।

আর যদি কিডনির নিচের নালিতে ছোট পাথর থাকে, আর রাস্তা বন্ধ করে না দেয়, তখন পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এটি নিয়ে এত চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসা করেন। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

তবে পাথর যদি দুই দিকে থাকে, একটাকে যদি সরিয়ে না দেন তবে অসুবিধা হতে পারে। প্রথমত ওখান থেকে প্রস্রাবে রক্ত যাবে। দ্বিতীয় হলো রাস্তা আটকে দিয়ে সংক্রমণ হবে। তৃতীয় হলো রাস্তা বন্ধ করে সম্পূর্ণ কিডনিকে সংক্রমিত করে দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত কিডনির কার্যক্রম নষ্ট হয়ে যাবে। কাজেই পাথর নিয়ে বসে থাকা ঠিক হবে না। এটি শেষ পর্যন্ত কিডনি নষ্ট হওয়ারও কারণ হতে পারে।

আরেকটি বিষয় হলো জন্মগতভাবে কিডনির যে নালিটা, এটাকে পেলভিস বলে, এটা জন্মগতভাবে সরু থাকে। ওখানে রাস্তা বন্ধ থাকলে সংক্রমণ হবে। কোনো জায়গায় যদি রাস্তা বন্ধ থাকে খুলে দিতে হবে।

তাই পাথর আপনার শরীরে আগে আছে কি না দেখেন, যদি থাকে তবে নেফ্রোলজিস্ট, ইউরোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে এটাকে সরিয়ে দেন। এবং ভবিষ্যতে যেন আর পাথর না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শগুলো মেনে চলাটা খুব জরুরি।

এবিআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ