রশীদ আহমদ
নিউইয়র্ক
কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ বেফাক এর মহাসচিব মরহুম মাওলানা আব্দুল জাব্বার রহ. এর কর্মময় জীবনকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ, রুহের মাগফিরাত কামনা এবং আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকার, সেনাবাহিনী ও উগ্রবাদী বৌদ্ধদের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড এর প্রতিবাদে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নিউইয়র্কের অর্ধশত উলামা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা অনতিবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমার সরকারের গণহত্যা ও নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান।
নিউইয়র্কের উডসাইড মাদানী মসজিদ এর উদ্দ্যোগে আয়োজিত নৈশভোজের পরপর অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই, তাই তাদের সাহায্যে বিশ্বের মুসলিম দেশসমূহ এগিয়ে আসতে হবে।
গত ২১ নভেম্বর সোমবার বাদ এশা উক্ত দো'য়া মাহফিল ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন নিউইয়র্কের শরীয়া'হ বোর্ড এর অন্যতম দায়িত্বশীল মুফতী রুহুল আমীন।
কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ এর মহাসচিব মরহুম জাহানাবাদী ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতন নিপীড়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা রাখেন মুফতী মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল মুমিন, মাওলানা আবদুর রহমান খান, মাওলানা রফিক আহমদ রেফায়ী, হাফেজ রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল ইসলাম ও মাওলানা মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
আলেম সমাজের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবু সাঈদ, মাওলানা বাশীর আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইবরাহীম আলী, মুফতী সায়্যিদ নো'মান, মাওলানা শাইখ আসআদ আহমদ, মাওলানা মাসুক আহমদ, মুফতী মুহাম্মদ ফারহান, মাওলানা মুহাম্মদ হাফেজ আবদুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ উসমান গণী, মুফতী নায়ীমুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন, মুফতী শরীফুল ইসলাম, মাওলানা আবদুর রহমান, মাওলানা আবু সুফিয়ান, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস উদ্দীন, মাওলানা হাশীম মুহাম্মদ, মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা মানজুরুল করীম, মাওলানা নাদীম আহসান, মাওলানা হুফাইজা করীম, মাওলানা মুহাম্মদ নূরুল হুদা,মুফতী মুহাম্মদ বুরহান, মুফতী মুহাম্মদ খালেদ কাওসার, মাওলানা আবুল খায়ের, মাওলানা আশরাফ উল্লাহ, ক্বারী মাওলানা মোস্তফা হোসাইন, মাওলানা মুজিবুর রহমান, লেখক রশীদ জামীল, মাওলানা মুখতারুর রহমান, মাওলানা হারুন,মাওলানা উবায়দুল্লাহ, ইমাম এহতেশামূল হক, মুফতী মুহাম্মদ নাসিরুল্লাহ, মাওলানা সাঈদুর রহমান, ক্বারী মুহাম্মদ রুহুল্লাহ ও মুফতী মুহাম্মদ ইসমাঈল নূরী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতিত মুসলিম ভাইবোনদের জন্য প্রতিটি মুসলিম দেশের পক্ষ থেকে জোরালো ভূমিকা রাখার আহবান জানানো হয়। সভা থেকে আরো বলা হয় যে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধে বিশ্বর সকল মানবতাবাদী সংগঠন/সংস্থা ও বিবেকবান মানুষকে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার জন্য। সাথে সাথে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের আশ্রয় দানের জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমুহ বিশেষ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি উদাত্ব আহবান জানানো হয় ।
এছাড়াও বিশ্বের সর্বস্তরের মুসলিম তাওহিদী জনতা নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বেদনার সাথে শামিল হওয়ারও জন্য উদাত্ব আহবান জানান সভার পক্ষ থেকে আরো বলা হইল যে আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন কর্তৃক বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে উচ্ছেদসহ জাতিগত নির্মূল অভিযানের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদের পাশাপাশি জাতিসংঘ, ওআইসি, সার্ক, আসিয়ান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরার জন্য বিশ্ব মুসলিম দেশ সাথে মিডিয়ার প্রতি উদাত্ব আহবান জানান।
এছাড়াও কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদীর ইন্তেকালে উপস্থিত সভায় সম্মিলিতভাবে শোক প্রকাশ করা হয় এবং জাহানাবাদীর মাগফিরাত ও মহান আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে মরহুমের জন্য জান্নাতুল ফিরদাউস কামনা করা হয় এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
সভায় অনেকেই বেফাকের মহাসচিব মরহুম মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদীর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ইতিবাচক বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন এবং শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করেন।
বেফাকের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইন্তিকালের আগে পর্যন্ত মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদির বুদ্ধিমত্তা, ধৈয্য ও আত্মত্যাগের সাথে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।এছাড়াও দীর্ঘ সময় সুনামের সাথে ঐ দায়িত্ব আন্জামকে সভায় বারবার শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।
পরিশেষে বেফাক মহাসচিব ও রোহিঙ্গার মজলুম নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন মুফতী মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন। তিনি দেশ-জাতির কল্যাণ কামনা করেন এবং নির্যাতিত আরাকানী মুসলমানদের জন্যে আল্লাহ তা'য়ালার বিশেষ সাহায্য কামনা করেন।
আরআর